সংঘবদ্ধ চক্র দ্বারা ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে নারীর সঙ্গে ব্যবসায়ীর অশ্লীল ভিডিও: গ্রেফতার দুই

আপডেট: জুন ১, ২০২১
0

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর মহানগরীতে বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে নারীর সঙ্গে ব্যবসায়ীর অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ধারন, টাকা আদায় ও চাঁদা দাবী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

গত ৩০/০৫/২০২১ খ্রিঃ আসামী ০১। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চলকে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে ও ২। মোঃ মুকসেনুল আরেফিন রুবেল(৪৯), পিতা- মৃত মাহবুবার রহমানকে তার নিজ বাসা রাধাবল্লভ থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২১/০৪/২০২১ খ্রি: রাত ০৯.০০ টার সময় পাথর ব্যবসায়ী মো: আরিফ হোসেন দুই ট্রাক পাথর নিয়ে সংঘবদ্ধ আসামী চক্রের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চল এর কথামতো বুড়িমারী স্থলবন্দর পাটগ্রাম থেকে রংপুরে আসেন। ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চল দুই ট্রাক পাথরের মূল্য ১,৪০,০০০ (একলক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা পরিশোধ করে। মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চল ব্যবসায়ীকে ব্যবসার স্বার্থে বাসা ভাড়ার প্রস্তাব দিয়ে ঐ রাত্রেই নগরীর কেল্লাবন্দ সরদারপাড়া এলাকায় একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠিয়ে দেয়। ঐ রাত্রেই ১০.৩০ ঘটিকার দিকে মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চল একজন অপরিচিত নারীকে নিয়ে ঐ পাথর ব্যবসায়ীর ভাড়া বাসায় প্রবেশ করে। তার কিছুক্ষন পরে ঐ চক্রের ৩/৪ জন সদস্য অকস্মাৎ ব্যবসায়ীর ভাড়া বাসায় প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঐ নারীর সাথে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ধারন করে।

উপরোক্ত ঘটনা সংক্রান্তে আরপিএমপি কোতয়ালী থানায় চাঁদা দাবী, প্রতারনা ও পর্নোপ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) রংপুর স্ব-উদ্যোগে মামলাটি গ্রহন করে। ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম(বার),পিপিএম এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় পিবিআই পুলিশ সুপার জনাব এবিএম জাকির হোসেনের নেতৃত্বে এসআই নুরে আলম সিদ্দিক গত ৩০/০৫/২০২১ খ্রিঃ আসামী ০১। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান চঞ্চলকে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে ও ২। মোঃ মুকসেনুল আরেফিন রুবেল(৪৯), পিতা- মৃত মাহবুবার রহমানকে তার নিজ বাসা রাধাবল্লভ থেকে গ্রেফতার করেন।

তদন্তে আরো জানা যায়, আসামীরা ঐ সময় ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর গ্রহন করে। পরবর্তীতে আসামী চঞ্চল বিষয়টি সুরাহা করবে মর্মে আশ^স্ত করে। এক্ষেত্রে তিনি নিজেও পরিস্থিতির স্বীকার মর্মে ব্যবসায়ীর নিকট অভিনয় করেন এবং সুষ্ঠু সুরাহার স্বার্থে আরো ০৬ ট্রাক পাথর বা সাত লক্ষ টাকা রংপুরে প্রেরনের প্রস্তাব করেন। উল্লেখ্য যে, ঐ সময় ব্যবসায়ীর নিকট পাথর বিক্রির গচ্ছিত দুই লক্ষ টাকা সন্ত্রাসীরা কেড়ে নেয়। অত:পর ব্যবসায়ীকে ০৬ ট্রাক পাথর বা সাত লক্ষ টাকা না দিলে নারীর সঙ্গে তোলা অশ্লীল ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তদন্তে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় স্বীকার করেন যে, আসামীরা প্রায়শই রংপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাবসায়ীদের বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায় করে।

তদন্তে আরোও জানা যায় ঐ নারীকে ঘটনার দিন আসামী নজরুল ইসলাম লাইটু ফোন করে ডেকে আনেন। ঐ নারীর কাছ থেকে একজন মহিলা রোগী ক্লিনিকে পাঠানোর সাহায্য চান। উল্লেখ্য ঐ নারী রংপুর মহানগরীর বেশকিছু ক্লিনিকে রোগী সরবরাহ করে থাকেন।

পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান যে, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে অজ্ঞাত আসামীদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। এরকম সংঘবদ্ধ ঘৃণ্য অপরাধ তদন্তে পিবিআই রংপুর সর্বোচ্চ আন্তরিকতা এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে।

ঘটনার বিষয়ে উক্ত নারী বিজ্ঞ আদালতে অত্র মামলা সংক্রান্তে স্বেচ্ছায় জবানবন্দী প্রদান করেন।