বন্যার্তদের মাঝে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঔষধ ও ত্রান বিতরণ

আপডেট: জুলাই ১, ২০২২
0

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা বন্যার্তদের মাঝে ১৪তম দিনে ১ হাজার
পরিবারের মাঝে খাবার সহায়তা দিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

শুক্রবার ( ১ লা জুলাই ) সকাল ১০ টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরণ করা হয়।

দপুর ২টায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন এর নিকট ২৫ লাখ টাকার জরুরী ঔষধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ হস্তান্তর করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সুনামগঞ্জ – সিলেটের ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. হালিমুর রেজা।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ত্রান বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ শান্তিগঞ্জ উপজেলা
চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাফিনা আক্তার, সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলের গণস্বাস্থ্য
ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. হালিমুর রেজা, গণস্বাস্থ্য
কেন্দ্র, পাগলা এর স্থানীয় পরিচালক জনাব আদুল আওয়াল,গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিল্পায়ন বিভাগেন কর্মকর্তা আবুল হাসান, মানব সম্পদ কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন, পাগলা কেদ্রের ম্যানাজার কামাল হোসেনসহ কর্মকর্তা ও
স্বেচ্ছাসেবকগণ।

ডা. হালিমুর রেজা বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পাগলা এবং আশেপাশের এলাকার দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ এর জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান,, ইউপি মেম্বার, নির্বাচিত মহিলা
মেম্বারদের নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝ থেকে ১০০০ পরিবার বাছাই করে এই
ত্রান দেয়া হয়। সমাজের অবহেলিত তৃতীয় লিংগের মানুষদের মাঝেও ত্রাণ
বিতরণ করা হয়।

এসময় সুনামগঞ্জ সিভিল
সার্জন অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন অফিসে অনুদান হিসেবে দেয়া ওষুধ গুলি ইউএনএইচসিআর-এর
অর্থায়নে সরবরাহ করা হয়। জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা
স্বাস্থ্য সেবায় তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে
সিলেট-সুনামগঞ্জ এর বন্যা মোকাবেলায় বিপুল পরিমাণ ওষুধ, সাধারণ সেলাই
ড্রেসিং এর যন্ত্রপাতি ও মেডিকেল কনজিউমেবল দান করে।

গণস্বাস্থ্যসকেন্দ্রের নিজস্ব ছয়টি মেডিকেল টিমের পাশাপাশি সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন
অফিসের মাধ্যমে এই ওষুধগুলি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রোগীদের বিনামূল্যে
চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হবে।

এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্য আরেকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাল্টিসার
ইন্টারন্যাশনাল এর পক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ যেমন, সার্জিক্যাল মাস্ক ৪০,০০০; এলকোহল হ্যান্ড রাব ৬০০ বোতল, কাপড়ের মাস্ক ৫০০০, ন্যাপকিন টিস্যু ১০০ পিছ, ফেসিয়াল ১০০ পিছ, হ্যান্ড সেনিটাইজারস১০০০ বোতল, লিকুইড সাবান ৪০০০ বোতল বন্যাদূর্গতদের সাহায্যার্থে
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিলেটে ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপকভাবে ত্রান বিতরণ
ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। ১৭ জুন থেকে বন্যার্তদের মাঝে ১০০ টন শুকনো খাদ্য চিড়া,গুড় বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয় । এর মধ্যে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের প্রায় ২০,০০০ পরিবারকে ১০০ টন চিড়া ও গুড়, ২ লিটারের ৫ হাজার বতল সূপেয় খাবার পানি ও গবাদি পশুদের জন্য ১৫ টন গো খাদ্য বিতরণ করা হয়। এছাড়াও সুনামগঞ্জের পাগলা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নওধার, বিশ্বনাথ, সিলেটে ১০টি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় ২ হাজার জনকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। বানবাসী দুই হাজার মানুষকে সুনামগঞ্জের পাগলা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, নওধার, বিশ্বনাথ, সিলেটে
আশ্রয় দেওয়া হয়। সিলেটে ও সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের মাঝে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকবে। বন্যা পরবর্তীতে কৃষি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগীতার হাত বাড়াবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।