মাথাপিছু আয় বেশি দেখাতে সরকার দেশের জনসংখ্যা কম দেখাচ্ছে—-মির্জা ফখরুল

আপডেট: জুলাই ২৮, ২০২২
0

মাথাপিছু আয় বেশি দেখাতে সরকার দেশের জনসংখ্যা কম দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি ঘোষণা হওয়া জনশুমারীর প্রাথমিক ফলাফলের ওপর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এমন অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ এই দেখেন- এখানে মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য জনসংখ্যা কম দেখানো হয়েছে। যেকোনো মানুষ বুঝবে যে, এখানে ১৮ কোটি আমরা হিসাব করি, আমাদের হিসাবে আসে প্রায় ১৮ কোটি মানুষ। সেখানে ১৬ কোটি মানুষ দেখালে তো মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর সুবিধা হবেই।”

জনশুমারীর গণণা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে ফখরুল বলেন, ‘‘ এবার জনশুমারীর গণনায় তারাই স্বীকার করেছেন যে, জনশুমারীর গণনা সঠিক হয়নি, বাড়ি বাড়ি যায়নি।”

‘‘ একটা বাড়িতে গিয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করেছে যে, এই বাড়িতে কতজন লোক খায়। ও(দারোয়ান) তো এতো সব বুঝে না। সে বলেছে যে, দিনের বেলা ২জন খায়, রাতের বেলা ৪জন খায়। এই যে বিষয়গুলো…এটা তো জনশুমারী হতে পারে না।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এসব করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, প্রতারনা করা। পুরো সরকারটাই প্রতারনার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটা একটা টোটালি ফেক গভার্মেন্ট।”

বুধবার ২০২২২ সালের জনশুমারির তথ্য প্রকাশ করে সরকার বলছে, বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন।

‘সংখ্যালঘু হামলা: ওদের এটা একটা কৌশল’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বর্তমানের ক্রাসিসটা কোথায়? ক্রাসিসটা হচ্ছে যে, গণতন্ত্র পুরোপুরি ধবংস হয়ে গেছে। তার যে মূল রাস্তা বা ফটক যেটা ‘গ্যাট ওয়ে টু ডেমোক্রেসি’ সেটা হচ্ছে নির্বাচন। এ নির্বাচনের দাবিতে গোটা দেশের মানুষ যখন একটাই কথা বলছে, এই দেশে কোনো নির্বাচন হতে পারে না যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকে। কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। খুব জোরে-শোরে এই দাবি উঠেছে।”

‘‘ নির্বাচন কমিশন নিজে এখন বলতে বাধ্য হচ্ছে যে, রাজনৈতিক একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে, সকল দলের অংশগ্রহন না হলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেই সময়ে এই দাবিটাকে পাস কাটিয়ে দেয়ার জন্য, তাকে দূরে রাখার জন্য এটাও তাদের একটা কৌশল। ডাইভারশন করা শুরু করেছে।”

‘মহিউদ্দিন রনির রেলের আন্দোলন: সরকারের কৌশল’

মির্জা ফখরুল ইসলাস আলমগীর বলেন, ‘‘ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন রনি আন্দোলন শুরু করেছিলেন। আমার স্ত্রী বলেছিলেন যে, দেখো কিভাবে কোনো রাজনীতি করে না, কিছু করে না সেই ছেলে কত ভালো কাজ করছে আরকি। সব মানুষকে নিয়ে আসছে।”

‘‘ আমি সেইদিনই তাকে(স্ত্রী) বলেছিলাম যে, দেখো খুব শিগগিরই দেখবে যে, এটা আওয়ামী লীগের একটা কৌশল, তা প্রমাণিত হবে। রনি ঠিকই প্রতিবাদী মিটিং শেষ করে গিয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে গিয়ে ঢুকেছে। এটা হচেছ বিভিন্ন কৌশল, ডাইভারশন। সংকটের যে মূল জায়গাটা গণতন্ত্র নেই বলেই তো সাম্প্রদায়িক এই হামলা বার বার ঘটছে, গণতন্ত্র নেই বলেই মানুষের যে অধিকার সেই অধিকার রক্ষা করা যাচ্ছে না, গণতন্ত্র নেই বলেই আজকে জবাবদিহিতা নেই, পার্লামেন্ট নেই, যা খুশি লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণও তাই। এ বিষয়গুলো করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা যাতে ডাইভারটেড হই, আসল জায়গা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য এই কাজগুলো করা হয়।”

সংবাদ সম্মেলনে নড়াইলের ঘটনার তদন্ত টিমের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, অমলেন্দু দাস অপু ও অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।