আইউটি’তে বিদেশী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :

গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজী (আইইউটি)’র প্রধান ফটক বন্ধ করে সোমবার বিক্ষোভ করেছে বিদেশী শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ব্যাক লক’ পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল সহ বিভিন্ন দাবীতে রবিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এ কর্মসূচি পালন শুরু করে। সকাল ১০টার দিকে তালা খুলে দিলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ফটকে অবস্থান করছিল। এ ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানাগেছে, ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি)র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘আইইউটি’ গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারে অবস্থিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ছাড়াও তিনশতাধিক বিদেশী শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। এদের মধ্যে শতাধিক বিদেশী শিক্ষার্থী রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে ফটক তালা বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাম্পাসে প্রবেশ করতে গেলে বাঁধা দেয় আন্দোলনকারীরা। মূল ফটক বন্ধ থাকায় অনাবাসিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাম্পাসের বাহিরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় অনেকে গেইট থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হন। সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনকারীরা কিছু সময়ের জন্য গেইট ছেড়ে দিলে অপেক্ষমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা মূল ফটকের কাছে অবস্থান করলেও ক্যাম্পাসে আসা যাওয়ায় কাউকে বাঁধা দিচ্ছে না।

আন্দোলনরত বিদেশী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনাকাঙ্খিতভাবে তাদের কিছু ফি বৃদ্ধি করেছে। পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই বাড়তি ফি নেওয়া হচ্ছে। ওই বর্ধিত ফি সহ সেমিস্টার পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিষয়ের ‘ব্যাক লক’ পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে সব বিষয়ে উত্তীর্ণ করনের মাধ্যমে পরবর্তী সেমিস্টারে লেখাপড়ার সুযোগ দেওয়ার পদ্ধতি চালুর দাবী করেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ আসনে বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে চাকুরির নিশ্চয়তা, আবাসিক হলে এসি ও ওয়াশিং মেশিন স্থাপন করে হোস্টেল ও শিক্ষার মান এবং সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবীতে বিক্ষোভ শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যলয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ধরে রাখতে পেছনের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিষয়ের উপর ‘ব্যাক লক’ পরীক্ষা নেওয়া হয়। আন্দোলনরতরা চাচ্ছে পরীক্ষার মাধ্যমে পেছনের অনুত্তীর্ণ বিষয়ে উত্তীর্ণ না হয়েই লেখাপড়া করতে। এখানে সকল বিদেশী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের লেখাপড়ার খরচ বহন করা হয়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এখানে সব দেশই সমান সুযোগ পায়।

তারা জানান, উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য রবিবার বিকেলে ওই শিক্ষার্থীদের ডাকেন। কিন্তু তারা সাড়া দেয় নি। পরে রাতে আন্দোলন শুরু করে। তবে সোমবার তারা উপাচার্যের সাক্ষাত চেয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন দেন।

তারা আরো জানান, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এনভায়রনমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো. তারেক উদ্দিনকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।