আন্দোলন সংগ্রাম করে আমরা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে ছাড়বো—হাবিব-উন-নবী খান সোহেল

আপডেট: মে ৩১, ২০২২
0

ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেছেন , ‘আওয়ামীলীগ এখন নিজেদের ছাড়া আর কাউকেই টলারেট করছে না। তবে আমরাও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনেই কেবল আমরা নির্বাচনে যাব। আন্দোলন সংগ্রাম করে আমরা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে ছাড়বো। ”
অনলাইন পোর্টাল দেশজনতা ডটকমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশ জনতা ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক ডা.জাকারিয়া চৌধুরী এ সাক্ষাতকারটি গ্রহণ করেন। হাবিব-উন-নবী খান সোহেল তার সঙ্গে সাক্ষাতকারে যা বলেছেন তা হুবুহু দেশজনতা ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

আসসালামু আলাইকুম
ওয়ালাইকুম সালাম। বসুন প্লিজ

আমরা স্যার দ্রুত মুল কথায় চলে যাই। আপনি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব আছেন। সব মিলে কেমন আছেন ? কেমন আছে বিএনপি ?

সোহেল : বর্তমানে দেশে দল বলুন আর ব্যক্তি বলুন,গুটি কয়েক আওয়ামীলীগ ছাড়া ভালো আছে ,বা ভালো থাকার আদৌ কোন সুযোগ আছে? ৫শতাধিক মিথ্যা মামলার আসামীকে কেমন আছেন প্রশ্ন করা আর লাইফ সাপোর্টে থাকা মানুষকে ভালো আছেন কিনা প্রশ্ন করা অনেকটা একই রকম নয় কি?

প্রশ্ন অল্প বয়সেই বেশ ভারী ক্যারিয়ার গড়েছেন। অবশ্য সয়েছেন অনেক। অনুমতি দিলে একটা প্রশ্ন করি।আগামী জাতীয় ইলেকশনের কোন আবহ উল্লেখ করার মত চোখে পড়ছে না।

সোহেল :

বিষয়টা সেভাবে না দেখে অন্যভাবে দেখুন। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, এই সরকারের অধীনে কোনো ধরনের ইলেকশনে আমরা যাব না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না বিএনপি।

এই সরকার তো ছুটছে ঘোড়ার মত । চারদিকে ধারকর্য করে অবস্থাটা এমন দাঁড় করিয়েছে যে,আমাদেরকে এখন ধার করে হলেও ঘি খেতে হবে। তারা কাউকেই তোয়াক্কা করে না। একের পর এক নির্বাচন সামনে পেলেই নিজেদের লোক লস্কর নিয়ে সেই তামসা করে ফেলছে একের পর এক। এখন প্রশ্ন হল- এই নির্দলীয় সরকারের জন্য কি আমরা ২০২৩ সালের ইলেকশন পর্যন্ত অপেক্ষা করব ?

সোহেল : না। আমরা আমাদের দাবির পক্ষে এবং এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আছি যা দিন দিন বেগবান হচ্ছে। এবং আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের দাবি আদায় করে নেব। আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠার আগে নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যাথা নাই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনেই কেবল আমরা নির্বাচনে যাব।

স্যার, একটা সম্পুরক প্রশ্ন করি। আজকের বিএনপি কি সামগ্রিক অর্থে সমন্বিত ?

সোহেল : অবশ্যই সমন্বিত।

বিএনপিকে আমার স্ক্যাটার্ড মনে হয়……………

সোহেল
: আপনার কাছে বিএনপিকে কেন স্ক্যাটার্ড মনে হয় তা আমার জানা নেই। বিএনপি এখন বরং আরও সু সংগঠিত, সু সমন্বিত।

আপনার ছাত্রদল তারপর অনেক হাত বদল শেষে আবার শ্রাবন- জুয়েলের বর্তমান ছাত্রদল। আপনার সময়ে ডিজিটালাইজেশন ছিল না। অথচ সারাদেশ আপনাদের কথায় নড়েছে। বর্তমান রানিং কমিটি বাদে মাঝে কি বিরাট কোনো শুন্যতা গেল নাকি ??

সোহেল : পৃথিবী সব সময় এক রকম থাকবে না, থাকেও না। আমি বরং বলব,ছাত্রদল আগের মতই শক্তিশালী আছে। সময়ের বিবর্তনে শেপ চেঞ্জা হতে পারে। পরিবেশ, পরিস্থিতি বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন আসে। আজকের ছাত্রদলকে দেখুন। এরা লড়াকু…… এদেরকে সরকার খুঁজে বেড়ায় কেন ? কারন সরকার জানে যে, এরা যে কোন সময় যে কোন পরিস্থিতিতে একটা আন্দোলন দাঁড় করাবার ক্ষমতা রাখে। সেজন্য আগে থেকেই ছাত্রদের মাঝে একটা প্যানিক তৈরী করে রাখতে চায় সরকার। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র,মা্নবাধিকার, ভোটের অথিকারসহ হারিয়ে যাওয়া সব মৌলিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে আনা, ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক জনাব তারেক রহমানকে সসম্মানে ফিরিয়ে আনাসহ ছাত্রদল যাতে তাদের দাবী নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য সদ্য ঘোষিত ছাত্রদল কমিটির নেতাকর্মীদের সাথে কিরুপ আচরন সরকার করছে তা আশা করি দেশের সবাই জানে।

২০১৩ সালে সারাদেশে যখন মাস কিলিং হচ্ছিল কিংবা ১৮ সালের কথা-ই ধরুন। দুইটা নির্বাচনের আগে পরে বিএনপির ভুমিকা দেখলে মনে হয়, দলটি বহুধা আদর্শিক বলয়ভুক্ত ?

সোহেল
: না না। মোটেই না। আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র নেতৃত্বে দল সুসংগঠিত ছিল। এখন উনি জেলে থাকলেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সু সংগঠিত, ঐক্যবদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। বহুধা বিভক্ত কেন ভাবছেন বুঝলাম না।

স্যার, সবিনয়ে জানতে চাইছি।

দেশের জাতীয় সন্তানদের চুবানো ডুবানোর কথা বলে ঠাট্রা মশকরা করা দল হিসেবে আওয়ামীলীগের মূল্যায়ন করুন–

সোহেল : হ্যাঁ, বাংলাদেশের একটা সবচে পুরনো রাজনৈতিক দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন- রাজনৈতিক শিষ্টাচার, নৈতিক আচার, সভ্যতা, ভব্যতা এসবের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই দলটিতে। এই দলে রাজনৈতিক কোন কালচার নেই। বাংলাদেশের মত দেশের জন্য সরকারী দল বা বিরোধী দলে যে-ই থাকুক বেসিক বিষয়ে সকলের একমত হওয়া উচিত ছিল। সকলের সাথে সকলের সুসম্পর্ক থাকা উচিত ছিল। এভাবেই দেশ ও রাজনীতি এগিয়ে যাবার কথা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন একটি দল হয়েও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ; তারা নিজেদের বাইরে কিছু ভাবেও না করেও না। নিজেদের বাইরে কাউকে টলারেট করতে পারে না, অন্য কারো মতামত গ্রহন করতে পারেনা।