আফগানিস্তানে ঘুষ নেয়া-দেয়া বন্ধ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
0

ডেস্ক রিপোর্ট:
আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার এক মাস পূর্ণ হয়েছে। এ সময়ে নগদ অর্থ সরবরাহ কম গিয়ে দেশটির অর্থনীতির সংকট আরও গভীর হয়েছে। একই সাথে জীবনের নানা ক্ষেত্রেও তালেবান শাসনের প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে সেখানে।

আফগানিস্তান-উজবেকিস্তান সীমান্তে গিয়েছিলেন বিবিসির সংবাদদাতা সেকুন্দার কারমানি। সেখানে একটি সেতু পেরিয়ে নতুন ‘ইসলামিক আমিরাতে’ ঢুকছিলো একটি মালবাহী কার্গো ট্রেন।

সীমান্তে উজবেকদের উল্টো দিকে তালেবানের সাদা কালো পতাকা উড়ছিলো। কিছু ব্যবসায়ী তালেবানের ক্ষমতায় ফিরে আসাকে স্বাগত জানিয়েছে।

গম বোঝাই একটি ট্রাকের চালক বিবিসি সংবাদদাতাকে বলেন যে এর আগে চেকপয়েন্ট পার হওয়ার সময় দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হতো। ‘এখন আর সেটি নেই। আমি কাবুলের পথে ড্রাইভ করে যেতে পারি কোন পয়সা না দিয়েই,’ বলছিলেন তিনি।

হাইরাতান বন্দরে তালেবানের হেড অফ কাস্টমস মৌলভী সাইদ বলছেন, বাণিজ্য বাড়াতে তারা শুল্ক কমিয়ে দিচ্ছেন এবং সম্পদশালী ব্যবসায়ীরা দেশে ফিরুক, সেটিকে তারা উৎসাহিত করতে চান। ‘এটি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে। আর পরবর্তী জীবনে ব্যবসায়ীরা পুরস্কৃত হবেন,’ বলছিলেন তিনি।

দেশটির চতুর্থ বৃহত্তম শহর মাজার ই শরীফ থেকে এক ঘণ্টা ড্রাইভ দূরত্বে মানুষের জীবনযাত্রা মনে হল স্বাভাবিক, যদিও অনেকে অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছেন।

বিবিসি সংবাদদাতা শহরের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ব্লু মসজিদের দিকে যান। সেখানে তিনি অগাস্ট মাসেও গিয়েছিলেন। তবে তখনও তালেবান এসব দখল করেনি। ওই সময় চত্বরটি ছিলো তরুণ নারী পুরুষে ভরা, যাদের অনেককেই দেখা গিয়েছিলো সেলফি তুলতে। এখন তালেবান লিঙ্গভেদে আলাদা সময়সূচী ঠিক করে দিয়েছে: নারীরা সকালে আসবেন আর পুরুষরা দিনের বাকী সময়। বিবিসি সংবাদদাতা যখন সেখানে যান, তখন সেখানে নারীর সংখ্যা ছিলো খুবই কম।

‘সব ঠিক আছে। তবে হয়তো নতুন সরকারের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে মানুষের বেশ কিছুটা সময় লাগবে,’ একজন নারী বলছিলেন।

স্থানীয় প্রভাবশালী তালেবান নেতা হাজী হেকমতের কাছে প্রশ্ন ছিলো যে, ‘আপনারা হয়তো নিরাপত্তা দিচ্ছেন কিন্তু সমালোচকরা বলছে আপনার এখানকার সংস্কৃতিকে হত্যা করছেন’। তিনি উত্তর দেন, ‘না’।

‘গত বিশ বছরে এখানে পশ্চিমা প্রভাব ছিল। চল্লিশ বছর আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ এক বিদেশী থেকে আরেক বিদেশীর কাছে গেছে। আমরা আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে হারিয়েছি। এখন আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনছি,’ বলছিলেন হাজী হেকমত। তার মতে, ইসলামে নারী পুরুষের মেলামেশা নিষিদ্ধ। হাজী হেকমতকে মনে হল, মানুষের সমর্থনও উপভোগ করছেন।