আমরা নির্বাচন কমিশনের পরীক্ষা নেয়ার জন্য নির্বাচনে এসেছি —গাজী আতাউর রহমান

আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, আমরা প্রত্যাশা করছি নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ হবে। আপনারা জানেন বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি গণমানুষের অনাস্থা তৈরী হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। আজকে নির্বাচন কমিশন বলছে তারা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে চায়। আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরীক্ষা নেয়ার জন্য নির্বাচনে এসেছি। আমরা নির্বাচন করছি মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশ হিসেবে।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই আজকে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন বর্জন করেছেন এবং আন্দোলন করছেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাদের আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তারা যেমন মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলছেন এবং আন্দোলন করছেন আমরা মনে করছি বিনা চ্যালেঞ্জে কোনো নির্বাচন ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের জন্য বোকামী হবে। এজন্য আমরা মনে করছি গাজীপুর সিটি নির্বাচন যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচন সেহেতেু এ নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহন না করলেও নির্বাচন হয়ে যাবে। এখানে নির্বাচনের কোনো সংকট, সমস্যা হবে না। আমরা মনে করছি নির্বাচন কমিশন যেহেতু সুষ্ঠু, টেরিবল নির্বাচন করতে চায়, তারা নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছে, আমরা এটা দেখতে চাই গাজীপুর সিটির নির্বাচন তারা কেমন করে। শুধু গাজীপুর নয়, পঁাচটি সিটিতেই আমাদের প্রার্থী থাকবে। প্রত্যেকেই আমরা বিজয়ের জন্য নির্বাচন করব।

বৃহষ্পতিবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে স্থাপিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের কাছে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রংপুর সিটি নির্বাচন অনেকটা সুষ্ঠু হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন। এজন্য আমরা আশাবাদী। গাজীপুর সিটি নির্বাচনও ভাল হবে, আমরা এ ব্যাপারে আশা করি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুরোধ করেছেন আমরা যেন আচরনবিধি মেনে চলি। আমরা আইন মানার লোক। কিন্তু অন্যান্য প্রার্থী নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘন করছেন। কিন্তু তাদের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। অতএব আমরা বলতে চাই যাতে সকলে সমান সুযোগ গ্রহন করে। নির্বাচনে মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে।

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইভিএম নিয়ে মানুষের বিড়ম্বনা আছে। রংপুরে স্বয়ং প্রার্থী মোস্তফা সাহেব তিনি নিজেও ইভিএম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছিলেন। আপনারা জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম থেকে সরে এসেছিলেন। আপনারা ব্যালটে ভোট নিবেন। এখন কেন আবার ইভিএম দিচ্ছেন। আমরা ইভিএম’র পক্ষে নই। মানুষের বিড়ম্বনা হয়, সংকট সৃষ্টি হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএম এ একটা নতুন বিড়ম্বনার সৃষ্টি হবে। মানুষের মধ্যে এখনও শঙ্কা আছে, মানুষ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবে কিনা, ভোট দিলে সঠিকভাবে গণনা হবে কি না? তার পক্ষে সেটা গণণা হবে কিনা? নির্বাচন কমিশন বলেছেন প্রত্যেক সেন্টারে সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে সিসিটিভি ছিল। কিন্তু সেখানে যারা ভোট নিয়েছেন তারা অনিয়ম করেছেন। সিসিটিভি’তে অপরাধী চিহ্নিত হলেও নির্বাচনী কর্মকর্তাগণও অনিয়ম করেছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে সুপারিশ করা হয়েছে তাদের শাস্তির জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সিসিটিভি ক্যামেরা ও অপরাধী চিহ্নিত হলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সেটি হবে একটি তামাশা। এটা সিসিটিভি ক্যামেরারার তামাশা হবে। আমরা তামাশার নির্বাচন চাই না। আমরা স্বত:স্ফুর্ত সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।

মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, গাজীপুর মহানগর কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফাইজুদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা আবু হানিফ সরকারসহ দলীয় নেতাকর্মীবৃন্দ।

###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।