আরও ১৪ জেলায় বন্যার শঙ্কা : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ, উদ্ধারে নেমেছে নৌবাহিনী

আপডেট: জুন ১৮, ২০২২
0

আগামী দুই দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায়ও বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি সিলেটবাসী। পানিতে জেলার ৮০ শতাংশ ভূমি তলিয়ে গেছে। পরিস্থিতি অবনতির কারণে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এর মধ্যেই দেশের উত্তরাঞ্চলেও বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে।

এদিকে শুক্রবার থেকে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আজ থেকে নৌবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হয়েছেন বলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ মজিবর রহমান নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নৌবাহিনীর ৩৫ জনের একটি ডুবুরিদল কাজ শুরু করেছে। বিকেলে ৬০ জনের আরেকটি দল সিলেটে আসবে। কোস্ট গার্ডের দুটি ক্রুজ দুপুরের পর আসবে। একটি সুনামগঞ্জ যাবে ও একটি সিলেটে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হবে। এ ছাড়া বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা ‘রেসকিউ বোট’ দিয়ে গ্রামে গ্রামে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নৌবাহিনীর একটি দল সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে কাজ করছে ও আরেকটি দল কোম্পানীগঞ্জের দিকে রয়েছে। এছাড়াও সেনাবাহিনী আজ সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ এ গোয়াইনঘাটে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

অপরদিকে ” পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে একই সময়ে দেশের মধ্যাঞ্চলের চারটি জেলায় বন্যা শুরু হতে পারে। দেশের তিন এলাকার ওই বন্যা আরও ৭ থেকে ১০ দিন ধরে থাকতে পারে।”

দেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দীর্ঘমেয়াদি বন্যার পূর্বাভাসে এমন সব আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

পূর্বাভাস কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আগামীকাল রোববার ও সোমবারের মধ্যে দেশের উজানে ভারতের মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভারী বর্ষণ আরও বৃদ্ধি হতে পারে। এরই মধ্যে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতের কারণে উজানের নদ–নদীগুলোর পানি বাড়ছে। নতুন করে বৃষ্টি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। অন্যদিকে পদ্মার মূল নদী গঙ্গার উজানে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তা আরও বাড়তে পারে। ফলে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর ও ফরিদপুরে নিম্নাঞ্চলে বন্যা শুরু হতে পারে।

৭ থেকে ১০ দিন দেশের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ এলাকা বন্যায় ডুবে থাকার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, একই সময়ে দেশের প্রধান দুটি নদী অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গার পানি বাড়ছে। সেই সঙ্গে তিস্তার পানিও এরই মধ্যে বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে সব মিলিয়ে এবার দেশে মাঝারি বন্যা হতে পারে।

বন্যার পূর্বাভাসে জানানো হয়, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কুড়িগ্রাম দিয়ে বন্যার পানি ঢুকছে। ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও পাবনায় বন্যার পানি প্রবেশ করতে পারে। আর তিস্তা অববাহিকার কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরে বন্যা শুরুর আশঙ্কা রয়েছে।