তুরস্কের মুদ্রা লিরার দাম সমানে কমছে। আর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের দাবি, তিনি ইসলাম মেনে সুদের হার কম রেখেছেন।
সোমবারও লিরার দাম পড়ে যায়। কিন্তু এরদোগান টিভিতে ভাষণ দিয়ে জানিয়ে দেন, তিনি আর্থিক নীতি বদলাবেন না। এরদোগান বলেছেন, ইসলাম মেনেই তিনি সুদের হার বাড়াচ্ছেন না। এ ভাষণের পর লিরার দাম সামান্য বাড়ে।
কিন্তু তুরস্কে এখন জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। মুদ্রাস্ফীতির হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও এরদোগান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে সুদের হার সমানে কমাতে বলছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ নীতির ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এরদোগান তার ভাষণে বলেছেন, তিনি ইসলামকে অনুসরণ করেই চলবেন। এ কারণে তিনি সুদের হার কম করতে বলেছেন। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাহায্য করার কথা বলেছেন এবং পেনশন তহবিলে আরো অর্থ দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
এরদোগান বলেছেন, ‘একজন মুসলিম হিসাবে আমি তাই করব, যা আমাকে ধর্ম করতে বলে। এটাই আমার কাছে একমাত্র নীতিনির্দেশিকা।’
লিরার অবস্থা
সোমবার এক সময় লিরার দাম ডলারের তুলনায় ১১ শতাংশ কমে যায়। বেলার দিকে দাম কিছুটা বাড়ে। লিরার দাম কমে যাওয়ায় তুরস্কের সাধারণ মানুষ এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছেন।
এরদোগানের ভাষণের পর লিরার দাম ১০ শতাংশ বাড়ে। নভেম্বরের গোড়া থেকে লিরার দাম ৪৫ শতাংশ পড়ে গেছে। সোমবার দেশের প্রধান শেয়ার বাজারে এক সময় বেচাকেনা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
বিদেশী কূটনীতিকরা মনে করছেন, এরদোগান ভাবছেন, আর্থিক উন্নতি হলে ২০২৩ সালের নির্বাচনে তিনি সহজে জিতবেন। এর ফলে তিন দশক ধরে তিনি তুরস্কে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।
এরদোগানের নীতি
এরদোগান মনে করেন, মুদ্রার দাম কম হলে রফতানি বাড়বে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে হলে সুদের হার বাড়াতে হবে। এরদোগান আবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি মুদ্রাস্ফীতির হার চার শতাংশের মধ্যে রাখবেন।
গতমাসে এরদোগান বলেছিলেন, তিনি আর্থিক স্বাধীনতার লড়াই লড়ছেন। লক্ষ্য হলো, তুরস্ককে বিদেশি বিনিয়োগের নির্ভরতা থেকে বের করে আনা।
সূত্র : ডয়চে ভেলে