ইরানের সাথে পরমাণু আলোচনায় সাফল্য চায় দেশগুলো

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২
0

ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সম্ভবত চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা শুরু হচ্ছে। সেই প্রচেষ্টা বিফল হলে ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইউক্রেন সংকট এড়াতে বিশ্বব্যাপী তৎপরতার মাঝেই মঙ্গলবার থেকে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হচ্ছে। ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় নতুন করে আলোচনা বসছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের প্রতিনিধিরা গত মাসের শেষেও মিলিত হয়েছিলেন বটে, কিন্তু সে যাত্রায় বিশেষ অগ্রগতি হয় নি। কিন্তু সব পক্ষের সম্মতিসহ ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি আবার কার্যকর করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিতের পর আবার সংলাপ শুরু হচ্ছে। এমনকি মার্কিন প্রশাসনও আশার আলো দেখছে। যদিও গত বছর থেকে আলোচনা প্রক্রিয়ায় সে দেশ পরোক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের মতে, সব পক্ষের সংশয় দূর করে চুক্তির সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কিন্তু আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত বোঝাপড়া সম্ভব না হলে আমেরিকার পক্ষে ২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তির কাঠামোয় ফেরা অসম্ভব হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছিলেন।

বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু চুক্তি বাতিল করার পর ইরানও চুক্তির শর্ত এত বেশি লঙ্ঘন করেছে, যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সে দেশ একটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট ফিসাইল উপকরণ হাতে পেয়ে যেতে পারে। বাইডেন প্রশাসন তাই এমন পর্যায়ে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে চাইলেও ইরানের অনুরোধে এখনো সে দেশকে পরোক্ষ আলোচনা চালাতে হচ্ছে।

সদিচ্ছা দেখাতে শুক্রবার আমেরিকা ইরানের বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচির উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ফলে অন্যান্য দেশ ও কোম্পানি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয় ছাড়াই সেক্ষেত্রে অংশ নিতে পারবে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, মঙ্গলবারের আলোচনায় মার্কিন প্রশাসনের কিছু জবাবের উপর বোঝাপড়া নির্ভর করবে। তার মতে, ভিয়েনায় আলোচনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি নতুন মার্কিন প্রশাসন আবার চুক্তি বাতিল না করার গ্যারেন্টিও দিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সুবিধার পথে সব বাধা কার্যকরভাবে দূর করলে তবেই বোঝাপড়া সম্ভব বলে মনে করছে ইরান।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শোলৎস ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রের সঙ্গে সোমবার এক সাক্ষাৎকারে পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেন। তার মতে, সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতির সময় এসে গেছে। আলোচনার সময়সীমা আর বাড়ানো উচিত হবে না বলে তিনি মনে করেন। শোলৎস এমন সুযোগের সদ্ব্যবহারের আশা প্রকাশ করেন।

রুশ মধ্যস্থতাকারী মিখাইল উলিয়ানভ রাশিয়ার কমারর্সান্ট সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, চূড়ান্ত বোঝাপড়ার খসড়াও প্রস্তুত হয়ে গেছে। কয়েকটি খুঁটিনাটি বিষয়ের নিষ্পত্তি বাকি রয়েছে মাত্র। তার মতে, আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে