ইসলামী শ্রমনীতিতে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ রয়েছে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২৩
0

মহিলা বিভাগের সিরাত সেমিনার অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ দুনিয়ার কোনো ভ্রান্ত মানুষের দেখানো পথে হাসিল হবে না। শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণের নিশ্চয়তা ইসলাম দিয়েছে। ইসলামী শ্রমনীতিতে শ্রমজীবীদের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ রয়েছে।

তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহিলা বিভাগ উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত ‘ইসলামী শ্রমনীতির বাস্তবায়ন এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদিকা ও মহিলা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক রোজিনা আখতার-এর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ নুরুন্নিসা সিদ্দিকা, অধ্যাপক উম্মে নওরীন ও এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক হাসিনা খাতুন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আখেরাতে সকল মানুষকে আল্লাহ কাছে জবাবদিহি করতে হবে। দুনিয়ার জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খানু হিসাব দিতে হবে। যারা দুর্বল মেহনতি শ্রমিকদের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর যারা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিল তারা সেদিন সম্মানিত হবে। মানুষের মনে আল্লাহর ভয় ও আখেরাতের জবাবদিহির অনুভ‚তি না থাকলে তাদের দ্বারা অমায়িক ব্যবহার আশা করা যায় না। আর অমায়িক ব্যবহার সম্পন্ন মানুষ তৈরির জন্য ইসলাম ও ইসলামী শ্রমনীতি সমাজ রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করা জরুরি।

সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ইসলাম শ্রমের প্রতি উৎসাহ জুগিয়েছে এবং শ্রমকে প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখেছে। ঠিক একইভাবে শ্রমিকের কাজকে সর্বোচ্চ মূল্য দিয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, শ্রমিকের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার আগে মজুরি পরিশোধ করতে হবে। শ্রমিকের শ্রম দ্বারা অর্জিত উপার্জনই শ্রেষ্ঠ উপার্জন।

সেমিনারে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে-
১.লাগামহীন বাজার দরের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
২.পেনশন বা অবসরকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা এবং রেশনিং-এর ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৩.শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী সকল আইন বাতিল এবং সকল বন্ধ কল-কারখানা খুলে দিতে হবে।
৪.সকল বকেয়া পাওয়া পরিশোধ করতে হবে।
৫.অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৬.মাতৃত্বকালীন সুবিধা ৬ মাস নির্ধারণ এবং শিশু লালন কক্ষ, প্রশিক্ষিত নার্স থাকতে হবে।
৭.স্বাস্থ্যকর ক্যান্টিন, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, হাসপাতাল, আবাসন ও শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য উন্নতমানের স্কুল এবং যানবাহন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৮.যোগ্যতার ভিত্তিতে মহিলাদের পদ মর্যাদা দিতে হবে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৯.৭ কর্ম দিবসের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ, ওভার টাইম ভাতা দ্বিগুণ এবং যখন তখন শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে।
১০.নিরাপদ কর্মস্থলের ব্যবস্থা এবং অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১১.মালিক-শ্রমিক সুন্দর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য নৈতিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২.ইবাদতের সুযোগসহ বিশ্রামের ব্যবস্থা এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩.কোম্পানির লভ্যাংশ ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকের অংশগ্রহণ এবং নিম্নতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা এবং অতিরিক্ত প্রোডাকশনের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
১৪.প্রতি বছর ১০% হারে মহার্ঘ্য ভাতা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৫.ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।