‘একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’-এই স্লোগান কিভাবে দেয়, প্রশ্ন নুরের

আপডেট: ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
0

‘একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’- ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে দেয়া এই স্লোগানের কঠোর সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। একই সাথে যারা এই স্লোগান দেন তারা কি সুস্থ মস্তিষ্কের কি না সেই প্রশ্নও তুলেন তিনি।

ডাকসুতে হামলার দুই বছর পূর্তি ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল বলেন, ‘রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়ে ছাত্রলীগ স্লোগান দেয়, একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর। শিবির যদি নিষিদ্ধ সংগঠন হয়, তাদের আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করুন। আমরাও একমত। অপকর্ম থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু একটা সংগঠন কিভাবে মানুষকে জবাই করার স্লোগান দেয়? এদের কি সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বলে মনে হয়?’

এ সময় ছাত্রলীগ সম্পর্কে নিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য আছে, কিন্তু কোনো বর্তমান নেই। গত ২০ বছরে এমন কোনো অঘটন নেই, যা ছাত্রলীগ করেনি। অভিভাকদের বলব, আপনার সন্তান এই গুন্ডা-পান্ডাদের সাথে মিশে খুনি হয়ে যাচ্ছে কি না, এটা খেয়াল রাখতে হবে। ছাত্রলীগ নামের মেশিনে ঢুকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা খুনি হয়ে যাচ্ছে। এই মেশিন ভাঙতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক দাসপ্রথা তৈরি করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের এই দুর্বৃত্তায়ন আর মেনে নেয়া যাবে না।’

এর আগে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে নুরুল হক ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। এতে নুরুলসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। সেই ঘটনা নিয়ে ‘ডাকসুতে বর্বর হামলার দুই বছর এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী-নির্যাতনের বিরুদ্ধে’ ছাত্র অধিকার পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগের সাথে তখন তাদের কোনো বিরোধ ছিল না, পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবু ছাত্রলীগ হামলা করেছিল ‘সরকারের উচ্চ পর্যায়ের’ নির্দেশনায়। তিনি বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ ঘটনা ছিল না। এ দেশের ভারতীয় এজেন্টদের পৃষ্ঠপোষকতায় এটি ঘটেছিল। শুধু এনআরসি–সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করায় ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় র-এর দালাল ও উগ্র হিন্দুত্ববাদের দোসরেরা সেদিন ডাকসু ভবনে আমাদের ওপর হামলা ও তাণ্ডব চালিয়েছিল।’

খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে বলে মন্তব্য করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আমি বলছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। এই মাফিয়াদের নির্মম পতন হবে। সেদিন প্রতিটি আঘাতের কড়ায়-গন্ডায় শোধ নেয়া হবে। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ফারুক হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য দেন।