এক বছর পরে মায়ানমারের কারাগার থেকে ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফিরিয়ে আনলো বিজিবি

আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২২
0

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর প্রচেষ্টায় মায়ানমারের কারাগারে সাজাভোগকৃত ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিকের দেশে প্রত্যাবর্তন

গত ০৬ মে ২০২১ তারিখ হতে বাংলাদেশী ৪১ জন নাগরিক মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে সাজাভোগ শেষে মিয়ানমারে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। বিষয়টি জানতে পারার পর থেকেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং মিয়ানমার এর সিতওয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলেট দীর্ঘ ১ বছর অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে।

তারই ধারাবাহিকতায় অাজ ২৩ মার্চ ২০২২ তারিখ বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মিয়ানমার এর অভ্যন্তরে Maungdaw POE (Point of Entry/Exit) নামক স্থানে অধিনায়ক, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এবং অধিনায়ক, নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ, মিয়ানমার এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে উল্লেখিত আটক বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, উক্ত পতাকা বৈঠকে ১৬ (ষোল) সদস্য বিশিষ্ট বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপি’র ৯ (নয়) সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পুলিশ লেঃ কর্ণেল কাও না ইয়াং শো, অধিনায়ক, নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ, মিয়ানমার। উক্ত পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার এর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এছাড়াও উভয় দেশের পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উত্তরোত্তর উন্নতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের প্রতিনিধি দল মতামত ব্যক্ত করেন।

পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমার হতে ফেরত আনা ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিকের বিষয়ে ১৫২০ ঘটিকা হতে ১৫৫০ ঘটিকা পর্যন্ত টেকনাফ জেটিঘাটে স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশী নাগরিকগণ বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গমনের অপরাধে বিজিপি কর্তৃক ধৃত হয়ে মিয়ানমারের কারাগারে সাজাভোগ করে আসছিল। এ ধরণের সাজাভোগকৃত ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে উক্ত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে অদ্যই ফেরত আনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করণের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট এর দীর্ঘ ০১ বছর প্রচেষ্টার ফলে মিয়ানমার কারাগার হতে মুক্তিপ্রাপ্ত ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। মিয়ানমার হতে ফেরত আনা ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিক পুলিশের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্যা কর্মকর্তা এর সমন্বয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পতাকা বৈঠক ও বাংলাদেশী ৪১ জন নাগরিক হস্তান্তর/গ্রহণ শেষে পারস্পরিক বিদায়ী শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মাধ্যমে অত্যন্ত শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশ সময় ১৪৩০ ঘটিকায় পতাকা বৈঠকের পরিসমাপ্তি ঘটে।

উক্ত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমার হতে ফেরত আনা ৪১ জন বাংলাদেশী নাগরিকের বিষয়ে ১৫২০ ঘটিকা হতে ১৫৫০ ঘটিকা পর্যন্ত টেকনাফ জেটিঘাটে স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লেঃ কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার, অধিনায়ক, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন কর্তৃক সাংবাদিকদের বিস্তারিত ব্রিফিং প্রদান করেন।