কল মালিকদের কাছ থেকে সাড়ে ছয় লাখ টন ধান ও সাড়ে ১১ লাখ টন চাল কিনবে সরকার

আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২১
0

সরকারি গুদামের খাদ্য মজুত বাড়াতে চলতি বোরো মৌসুমে সাড়ে ছয় লাখ টন ধান এবং সাড়ে ১১ লাখ টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ এপ্রিল থেকে ধান সংগ্রহ শুরুর কথা থাকলে বেশিরভাগ জেলায় এখনও সে কার্যক্রম শুরু হয়নি। আর আজ ৭ মে থেকে শুরু হয়েছে চাল সংগ্রহ অভিযান। শেষ হবে ৩১ আগস্ট।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার খাদ্যশস্য ক্রয়ে গতি ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সাথে অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। তবে ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।

চালকল মালিকদের উদ্দেশ্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন; এই করোনাকালীন সময়ে মানুষকে সেবা করার উপযুক্ত সময়। সবসময় সরকার আপনাদের নিকট হতে চাল ক্রয় করে এবং এবারও আপনারা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চালকল মালিকদের চুক্তি মোতাবেক সঠিক সময়ে চাল দেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

গত দুই মৌসুমে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার একাধিকবার বলেছিলেন, চালকল মালিকরা যদি সিন্ডিকেট করে, তাহলে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হবে।

সরকারের সংগ্রহ নীতিমালা অনুযায়ী গুদামে সব সময় মজুদ থাকার কথা কমপক্ষে ১০ লাখ টন চাল। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মজুদ থাকা উচিত ১৫ লাখ টন। কিন্তু এখন সরকারের কাছে মজুদ আছে মাত্র দুই লাখ ৯৭ হাজার টন। সরকার আমদানির মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

তাছাড়া , বেসরকারিভাবে সাড়ে ১৫ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন হলেও এসেছে সাড়ে সাত লাখ টনেরও কম। আর সরকারিভাবে সাড়ে ১০ লাখ টন আমদানির লক্ষ্য থাকলেও আমদানি করা হয়েছে মাত্র তিন লাখ ৮৩ হাজার টন। বিশাল এই ঘাটতির কারণে চালের বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। সেটি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে , এসময় নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করায় মোটা ও মাঝারি মানের নতুন চালের দাম কেজি-প্রতি দুই থেকে পাঁচ টাকা কমছে। তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পুরাতন নাজির ও মিনিকেটসহ ভালো মানের চাল।

শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীর বাজারে দেখা গেছে, পুরাতন ভালো মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি-প্রতি ৬৪-৬৫ টাকায়। তবে নতুন মিনিকেট ও নাজির বিক্রি হচ্ছে কেজি-প্রতি ৬০ টাকায়। এছাড়াও বাজারগুলোতে ভালো মানের কাটারিভোগ চাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা, মধ্যমানের কাটারিভোগের চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি।

তবে ক্রেতারা বলছেন, গত বোরো মৌসুমের চেয়ে এবার চালের দাম অনেক বেশি। গত এক বছরে দেশের খুচরা বাজারে চালের দাম প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

বর্তমানে বাজারে ধান-চালের দর বাড়তি থাকার কথা উল্লেখ করে দিনাজপুর রাইস সেন্টারের ম্যানেজার আলমগির হোসেন রেডিও তেহরানকে বলেন, নতুন ধান এখানে সব এলাকায় উঠতে শুরু করে নি। দিনাজপুর অঞ্চলে ধান বাজারে আসবে ঈদের পর। এখন বাড়তি দামে ধান কিনে তা প্রসেস করে চাল হিসেবে বাজারে বিক্রি করতে গেলে দামটা একটু বেশীই পড়ছে।