কাপাসিয়ায় হামলা চালিয়ে পুলিশের নৌকা মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দিল যুবকরা, দুই নারীসহ গ্রেফতার ১৬

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
0

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরের কাপাসিয়াায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলারে করে মেয়ে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ ও গণউপদ্রব সৃষ্টির অভিযোগে আসামী ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশের টহল টিম। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর করে তাদের নৌকা মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়। এতে প্রাণে বেঁচে গেলেও এসআই সহ পুলিশের চার সদস্য এবং তাদের মাঝি আহত হয়েছে। এ ঘটনায় দুই নারীসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে কমপক্ষে ৪৩/৪৫ জনের একদল লোক বুধবার ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে নৌ ভ্রমণে বের হন। তারা পার্শ্ববর্তী গফরগঁাও এবং শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকার নৌপথ ঘুরে রাত আনুমাণিক ১০টার দিকে কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা হয়ে ফিরছিলেন। তাদের সঙ্গে দুইজন নারী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। নৌযানে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নেচে গেয়ে ডিজে পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ফেরার পথে পারিশ্রমিক না দেওয়ায় নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে যুবকদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে নৃত্যশিল্পীরা ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দিয়ে শ্লীলতাহানি থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের চার সদস্যের একটি টিম নৌকা নিয়ে কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী এলাকায় নৌভ্রমণকারীদের নৌযানের কাছে পেঁৗছে। এসময় ভ্রমণকারী যুবকরা নৌযান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানীয়ের খালি বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের নৌকার মাঝি রফিকুল ইসলামকে (৪৫) বেধড়ক মারধর করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় হামলাকারীদের নৌকার পিছু নেয় পুলিশের নৌকা। কিছুদুর যাওয়ার যুবকরা তাদের নৌকা দিয়ে পুলিশের নৌকাকে ধাক্কা দিয়ে মাঝ নদীতে ডুবিয়ে দেয়। পুলিশের সদস্যরা আশপাশের নৌমাঝিদের সহায়তায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ কোনোরকমে তীরে উঠে প্রাণে বেঁচে যান। এসময় পুলিশ সদস্যদের সাহায্যের জন্য ট্রিপল নাইনে ফোন করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশের অপর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই নারীসহ ১৪ জনকে আটক করে। এসময় অন্যরা পালিয়ে যায়। বৃহষ্পতিবার পুলিশ স্থানীয় নাকাসিনি ঘাট এলাকা থেকে যুবকদের নৌকার মাঝি মিলন (৪৫) ও হেলপার সাগরকে (৩০) আটক করে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদেরসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে কাপাসিয়াা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, পুলিশের আহত এসআই সাজ্জাদ আলম, কনস্টেবল আরশেদ, মোঃ ইসমাইল ও আল-আমিনকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত পুলিশের ট্রলারের মাঝি রফিকুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- শফিকুল ইসলাম, মাহবুব আলম, মোঃ রাসেল, মোঃ মারুফ, ইমরান, ইমন, মোঃ মেহেদী, মোঃ সুমন, মোঃ মুরাদ, মোঃ মাসুম, মোঃ ইমরান, নিহাদ মোল্লা, সোনিয়া, মুক্তা, মিলন ও সাগর। শেষোক্ত দুইজন বাদে তাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১৮ এর মধ্যে। এদের বাড়ী গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও নারায়াণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায়।