কুড়িগ্রাম কারাগারে চিহ্নিত মাদক ব‍্যবসায়ী এক হাজতীর চিকিৎসাধীন অবস্হায় মৃত্যু

আপডেট: জুন ৪, ২০২৩
0

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে ভূরুঙ্গামারীর চিহ্নিত মাদক ব‍্যাবসায়ী একরামুল হোসেন এরশাদ (৩৫) নামের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (০৩ জুন) দুপুরের দিকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হাজতির মৃত্যুর বিষয়টি সত‍্যতা নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার মো; আবু সাইম। তিনি বলেন, একরামুল হোসেন নামের ওই হাজতি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ওই হাজতি ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারী এলাকার শওকত আলী ছেলে। শনিবার বিকেলে ওই হাজতীর মৃতুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় লোকজনের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। তাদের দাবী একরামুল এলাকার মাদক সম্রাট বলে পরিচিত।সে সবসময় মাদক সেবন করে এলাকায় মাতলামী করত।কেউ বাধা দিলে তাকে অসন্মান করে গালি গালাজ করত।
নিহত একরামুলের বোন শিউলি বেগম অভিযোগ করে বলেন পুলিশি নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিহত একরামুলের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্ন মিথ্যা। এছাড়া একরামুল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব‍্যবসায়ী ও মাদক সেবন কারী। তার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের ১০ টি মামলা চলমান আছে।
জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে নিহত ওই হাজতিকে মাদক ব্যবসার অভিযোগে আটক করে ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। তার কাছে মাদকদ্রব্য না পেলেও ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। এ অবস্থায় শনিবার কারাগারে একরামুল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে জেলা কারাগার থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস‍্য রিপন মিয়া বলেন নিহত একরামুল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব‍্যবসায়ী ও মাদক সেবন কারী।সে এলাকার মানুষকে সন্মান করতনা।পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছে কিনা সে বিষয়ে আমি জানিনা এবং শুনিও নাই।
নিহত একরামুলের এলাকায় বাড়ি ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম‍্যান আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন মন্ডল বলেন একরামুল এরশাদ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী । তার মৃত্যুতে কিছুটা হলেও এলাকায় মাদক সেবিদের সংখ্যা কমবে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সুপাররিন্টেনডেন্ট ডাক্তার মো: শহীদুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে আনার পথেই ওই হাজতীর মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি। আসলে কি রোগে মৃত্যু হয়েছে পরীক্ষা নীরিক্ষা না করে এ বিষয়ে বলতে পারছিনা।
জেলার আবু ছায়েম বলেন, ‘ওই আসামিকে হাসপাতালের কাগজসহ (চিকিৎসাপত্র) কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কাগজে ফিজিক্যাল এ্যাসল্ট লেখা ছিল। আমরা তাকে কারা হাসপাতালে রেখেছিলাম। শনিবার দুপুরে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, একরামুল হোসেন এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবন কারী। তার নামে ভুরুঙ্গামারী থানায় ১০ টি মাদকের মামলা রয়েছে। মাদক কেনা-বেচার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। পরে তার কাছে মাদক না পাওয়া গেলেও ১৫১ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তবে তাকে কোন প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। নির্যাতনের বিষয়টি মিথ্যা।
####