কৃষক-মজুরের জীবন সরকার দুর্বিষহ করে তুলেছে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২২
0

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইউরিয়া সার ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, সরকার নিজেদের দুর্নীতি-লুটপাট আড়াল করতে গিয়ে কৃষক-মজুরের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। উন্নয়নের নামে একের পর এক মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, কবির আহমাদ, মুজিবুর রহমান ভূইয়া, মনসুর রহমান, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

হারুনুর রশিদ বলেন, দেশে গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বমুখী চলছে। কৃষক-মজুর ও খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষরা আজ দিশাহীন। ঠিক এই সময় সরকার ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধি করে কৃষকদের বিপাকে ফেলে দিয়েছে। এমনিতে দেশে কৃষকরা উৎপন্ন পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত। এমতাবস্থায় কৃষি পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা চাষ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে দেশে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিবে। খাদ্য আমদানি করতে গিয়ে সরকার আবারও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার জনবান্ধব সরকার নয়। রাতের আঁধারে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে সরকার এই কথা আবারও প্রমাণ করেছে। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পাচ্ছে তখন সরকার কোন রকম জনশুনানী ছাড়া একতরফা ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব কৃষি হতে শুরু করে সর্বত্র ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। ডিজেল ও ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষকের খরচ বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির হেতু জিনিসপত্রের দাম আরেকদফা বৃদ্ধি পাবে। এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও কষ্টের শিকার হবে কৃষক-মজুর ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষরা।

অধ্যাপক হারুন বলেন, সরকার বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে লুটপাট ও দুর্নীতি আড়াল করতে চাইছে। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে এটি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট মেগা প্রকল্পের নামে সরকারের লোকজন বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করায় আজ আমাদেরকে আইএমএফ কাছে হাত পাততে হচ্ছে। আইএমএফ তাদের অযৌক্তিক শর্ত আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আর সরকার আরও দুর্নীতি ও লুটপাটের আশায় সে শর্ত মেনে নিচ্ছে। সরকারকে অবিলম্বে বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সকল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে ও অযৌক্তিকভাবে প্রদত্ত সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বাতিল করতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।