`কেউ কি আমার অনাথ শিশুটাকে উদ্ধার করে দেবেন ‘

আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২২
0
file photo


দ্যা এ্যানোনিমাস

আজ উগান্ডার একটা গল্প বলতে এসছি,
সেখানে শান্তিরক্ষী হিসেবে আঠারো বছর কামলা দিয়েছি।
যিনি আমার বেশ কাছের মানুষ ছিলেন তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল,
নাকি ফ্রেন্ডলি ফায়ারে মরেছেন আমি জানিনা।
কেবল দেখলাম কমান্ডারের হুকুমে ফিউনারেল হয়ে গেল
উগান্ডার মাটিতেই।

শান্তিরক্ষী হিসেবে তাকে শেষ স্যালুট আমার দেয়া হল না !
কি বিষ্ময়কর ! তিনি অতি উঁচু পদের সরকারী আমলা ছিলেন,
কেন যে তড়িঘড়ি এতো বেশি হল বুঝলাম না।
অফিসের কাজ সেরে তার দায়িত্ব ছিল ঘর ঝাড়ু দেয়া,
ঘর মোছা, হাড়িবাটি ভিম দিয়ে মেজে চকচকে করা,
বাসার সকলের কাপড় ধোঁয়া, দোকান থেকে আয়রন করা,
বাজার করা, মসল্লা গ্রাইন্ড করা, সবজি,পিয়াজ রসুন কাটা,
কিমার গোশত ছেঁচা, বউয়ের হাত পা টেপা সেবা আর সেবা।
মনে রাখবেন এসব কিন্তু অফিস শেষে বাসার কাজের কথা!
বাসায় গৃহকর্মী কিংবা ড্রাইভার রাখা হতো না।
নিশান সেডান কারটাও তাকেই পরিস্কার করতে হত !
শ্বাস কষ্টের ব্যারাম ছিল তার।
আমি জনে জনে পা ছুঁয়ে অনুরোধ করেছি কমপক্ষে এক যুগ,
তীব্র শীতে কিংবা বালুময় চৈত্রে কেউ তাকে সাহায্য করুক ,
বলেছি জনে জনে, করেনি কেউ।
ফুসুফুস দুটো শেষ বেলায় লোহা হয়ে গিয়েছিল,
কি ভয়ংকরভাবেই না সারাটা রাত কাশতেন।
মরার মাস ছয় আগে একটা অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর নাকে লাগিয়ে,
সবাই দায় সেরেছে, আকাশ বাতাস কাপিয়ে তুলেছে উচ্ছাসের ঢেউ।
তার ভদ্র বেশ্যাটার কাজ ছিল সামান্য এক চিলতে কাপড় পরে,
হিন্দুস্থানী সিরিয়াল দেখা আর অফিস বসের মনোরঞ্জনের জন্য,
অনেক বাহারি রান্না করে দরকার খিল আটকে দেয়া।
হ্যাঁ, আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি উগান্ডার প্যান্ডোরা খুলে দিচ্ছি।
আরও দেব, আমিও সারা শরীরে দগদগে ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি।
আমার একটা শিশু ছিল জানেন,
তার সাথে আমার অনেক প্রনয় ছিল প্রেম ছিল,
সে কথা বলতে শিখেনি,
প্রতি সপ্তাহে আমি তার গায়ে কেবল নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছি,
মনে রাখবেন উগান্ডার গল্প বলছি।
শিশুটি ১৯ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত এক প্রকার গৃহবন্দী,
এইতো গতকাল সকালে চারমাস পর যখন দেখা মিলল-
আমি দেখলাম চুল তার এক বিঘা লম্বা
নখ গুলো বড় হয়ে চিতার নখের মত আকার ধারন করেছে,
সে বদ্ধ পাগল হয়ে গেছে। সে আমার সন্তান !!
হায় ঈশ্বর এ কি হাল হয়েছে তার !!
তারা আমাকে মামলা হামলায় বিদ্ধস্ত করে রেখেছে।
কিন্তু অবুঝ শিশুটি !! তাকে কিভাবে আটকে রেখেছে বুঝেছেন ?
নির্যাতনের নমুনা শুনবেন ?

তাকেও এক বিকেলে আমার সাথে লাথি মেরে দোতলা থেকে
ফেলা দেয়া হয়েছিল। সে প্রানে বেঁচেছে,
আমার তো কেবল পা টা ভেংগেছে।
আর যিনি মরেছেন ? তিনি মরার আগ পর্যন্ত জুতা পেটায় ছিলেন,
না না এরচে বেশি কিছু না বলি। ভাবুন কি যাতনা সয়েছেন !!
তাকেই বাজার করতে হত স্ত্রীর মনোরঞ্জনের জন্য,
বস তো দুপুরেই আসেন, বসেন, সব খেয়ে বিকেলে বিদেয় নেন।
মানবাধিকারের লোকেরা কেউ কি শুনছেন ?
আদিলুর রহমান শুভ্র কে কোথায় আছেন ?

আমি আঠারো বছর এ ভার বহন করেছি,
কেউ কি আমার অনাথ শিশুটাকে উদ্ধার করে দেবেন ?
বলছি না তিনি ফ্রেন্ডলি ফায়ারে খুন হয়েছেন,
বলছি তিনি আমার একটা স্যালুট পাওনা ছিলেন।
খুব তড়িঘড়ি করে কেন যে তাকে গোর দিলেন,
আমি ঠিক বুঝলাম না।

শিশুটা আগে চারজনের হাতে নির্যাতিত হত,
এখন তিনজনের হাতে হবে কেউ কি বুঝতে পারছেন ?
আমি গরীবগঞ্জের লোক,
আমাকে কেন জোর করে টেনে এনেছিলেন ?
যৌন দাসের বেশি মর্যাদা কি দিয়েছিলেন ?
আমাকে যৌন নির্যাতন করেছেন ঠিক ইডেনের মত,
ভুল বলছি ? আবার মামলা দেবেন ? দেন।
আমি এখন বলতে শিখে গেছি-
এমন কমান্ডার চাই না, ভন্ড চরিত্রহীন সমাজ চাই না,
আমার শিশুটাকে অন্ততঃ প্রানে বাঁচবার সুযোগ করে দেন।
বারো ভাতারি কমান্ডার তার বিকৃত সুখ আরো বেশি অনুভব করুক।
আমার চাওয়াটা খুব সামান্য,
শিশুটিকে খোলা আকাশের নিচে কেবল বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেন।