কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশ নেবে না : অধ্যাপক মুজিবুর

আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২৩
0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া জামায়াতে ইসলামী আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে নগরীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা ন্যায়পরায়ণ শাসকের গুরুত্বপূর্ণ মূলকাজ। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষ আজ চরমভাবে জুলুমের শিকার। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ অবস্থায় কোনো সাধারণ মানুষ ও মুসলিম ঘরে বসে থাকতে পারে না। একজন মুসলমানের শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে জান্নাত লাভ সম্ভব নয়। আমাদেরকে ন্যায় ইনসাফের সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে আন্দেলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও রাজশাহী মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসেন, নায়েবে আমির ও রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু মোহাম্মদ সেলিম ও সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ন্যায় পরায়ণ শাসক কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তায়ালার আরশের নিচে ছায়া পাবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক আজ আমাদের ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ বা শাসকের খুবই অভাব।

তিনি আরো বলেন, দ্বীন কায়েমের জন্য পেছনে পড়ে থাকার সুযোগ নেই। আমাদেরকে ইসলামের জন্য নিজের সম্পত্তির একটা অংশ দান করে যেতে হবে। ঋণ মুক্তভাবে আল্লাহর নিকট হাজির হতে হবে। নিকট আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। সর্বাবস্থায় আল্লাহর ওপরই নির্ভরশীল থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে দুনিয়ার জীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। পরকালীন জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের দুনিয়ার জীবনকে পরিচালিত করতে হবে। জুলুমবাজ শাসক গোষ্ঠীর হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য সংগ্রাম চালানো হলো সবচেয়ে বড় জিহাদ। আমাদেরকে চলাফেরা, উঠা-বসাসহ সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ টি এম মাসুম বলেন, দেশে আজ সঙ্কটময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। বিগত ১৫ বছর এ সরকার ইসলামের মৌলিক আর্দশ ও নীতি-নৈতিকতাকে নষ্ট করেছে। দেশে এক অরাজকতা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মেগা প্রজক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দেশের আলেম ওলামাদেরকে গণগ্রেফতার করে ইসলামের পক্ষে যারা কথা বলেন তাদের কণ্ঠকে রোধ করা হয়েছে। যেকোনো নির্বাচনে ইসলামের কথা বা ধর্মীয় অনুশাসনের কথা বলাকে নিষিদ্ধ করেছে। একদিকে ধর্মীয় শিক্ষা বন্ধ করে ইসলাম বিদ্বেষী যৌন শিক্ষাকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রক্ষাপটে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মাঠে ময়দানে শক্তিশালী ও দিক নির্দেশনামূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।

অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে যতই জুলুম নির্যাতন করুক না কেন দ্বীনের স্বাভাবিক কাজ সর্বাবস্থায় চলমান রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে দুনিয়ার জীবনের এ কাজ এমন দৃঢ়ভাবে করতে হবে যাতে আমরা আল্লাহ নিকট পরকালে জবাবদিহি করতে পারি।