ক্ষমতাসীনরা টিকাতেও ভাগ বসাচ্ছে, বানিজ্য করছে–ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২১
0

ক্ষমতাসীনরা টিকাতেও ভাগ বসাচ্ছে, বানিজ্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
রোববার দুপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষন জাতীয় কমিটির আহবায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “ আমরা ৭০টা জেলায় কাজ-কর্ম করছি। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব বলেন যে, আমাদেরকে দেখা যায় না। উল্টো তো উনার দল রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। ওরা কী করছে?”
“ টিকাতে ভাগ যেয়ে বসাচ্ছে। দলের লোকদের লাগাইয়া দিছে, ওখানে ভাগ বসাচ্ছে। এমনো রিপোর্ট আছে টোকেন দিয়ে ভাগ বসাচ্ছে, সেই টোকেনে তারা মানুষের কাছ থেকে পয়সা নেয়। গণমাধ্যমে এসব খবর এসেছে। শুধু তাই নয়, তারা টিকার রেজিস্ট্রেশনে পয়সা নিচ্ছে। এসব ব্যবসা তারা করছে। সব জায়গায় তারা বানিজ্য করেছে, এখানেও বানিজ্য শুরু করছে।”
সরকারের সমন্বয়হীনতার কথা তুলে ধরে টুকু বলেন, “ গণটিকা শুরু করেছে প্রথমে বলেছেম ৭দিন, এখন বলছে, তিনদিন। আমরা দাবি করে আসতেছি যে,আপনারা একটা ফুল চার্ট দেন। আমার কাছে এতো টিকা মজুদ আছে, আমার পাইপ লাইনে এতো আছে, আমি প্রতিদিন এতো টিকা দেবো। তাহলে জনগন স্বস্তি পেতো। কিন্তু সরকারের কোনো রোডম্যাপ জনগন জানে না, সাংবাদিকরাও জানে না।”
“ একটা সভ্য দেশে এই ধরনের কাজ পরিচালনা করে আমরা বৃটেনে দেখেছি, আমরা ভারতে দেখেছি তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রী একটা ফুল চার্ট দিয়েছে যে, আমার কাছে এই স্টক আছে, আমি কোভ্যাক্স থেকে এতো পাচ্ছি, আমি দিনে এতো লক্ষ টিকা দেবো। দেখেন ভারতে মন্ত্রিসভার রদবদলে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর চাকুরি চলে গেছে।আর আমাদের এখানে আপনারাই দেখছেন…।”
করোনায় বিএনপির কার্য্ক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, “ করোনার প্রকোপ বেশি হওয়ার কারণে আমরা মনে করেছি যে, মানুষকে করোনা চিকিতসা ও ঔষধপত্র প্রদান জরুরী। গরীব মানুষের পক্ষে এটা বহন করা সম্ভব হয়। সেজন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে করোনা হেল্প সেন্টার স্থাপন করে মানুষের পাশে থাকার। এখন পর্যন্ত আমরা ৭০টা জেলা ও মহানগরে এই সেন্টার খুলতে পেরেছি।”
“ যদি নির্দেশ নাই তারপরেও আমাদের নেতা-কর্মীরা থানা-উপজেলায়ও করোনা হেল্প সেন্টার খুলেছে। আমরা জেলা থেকে তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করছি ঔষধপত্র দিয়েছে। প্রত্যেকদিন মানুষের চাপ আমাদের সেন্টারগুলোতে পড়ছে বেশি। বিশেষ করে অক্সিজেনের সিলিন্ডার। ইউনিয়ন লেভেলেও আমাদেরকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠাতে হচ্ছে। আমরা অসহায় মানুষের জন্য সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। করোনার প্রকোপ না কমা পর্যন্ত আমাদের এই কার্য্ক্রম চলবে।”
করোনার বিভিন্ন ঔষধপত্র, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রি প্রদানের জন্য জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসাসিয়েশনের কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “ ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে তিনদিন আগে তারা ব্যানার টানিয়ে লাগিয়েছে যে, কোনো বেড খালি নেই, অক্সিজেন নেই, ঔষধ নেই। কোনো ভর্তি হবে না।”
জেলা হেল্প সেন্টারগুলোতে ২০১৮ সালের দলীয় প্রার্থিতার জন্য যারা আবেদন করেছিলেন এবং যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদেরকে সংযুক্ত হওয়ার জন্য আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের উদ্যোগে ‘বিএনপির করোনা হেল্প সেন্টার’ এর জন্য ঔষধ সামগ্রি, অক্সিজেন সিলিন্ডার, মাস্ক, হেন্ড স্যানিটাইজার প্রভৃতি হস্তান্তর উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ সেলিম, জহিরুল ইসলাম শাকিল, মেহেদী হাসান, ফখরুজ্জামান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, শামীমুর রহমান শামীম, মাহবুব আলম চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন নসু, শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।