খালেদা জিয়া বন্দী নয় মুক্ত, তিনিতো বাসায় আছেন : আইনমন্ত্রী

আপডেট: ডিসেম্বর ৩, ২০২২
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদাকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি মুক্ত, তিনি তার বাসায় আছেন। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তখন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুইটার অধিক মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলায় তিনি জেলে গিয়েছিলেন। জেলে থাকার সময় তার পরিবার থেকে দরখাস্ত করা হয়েছিল যে তার অন্তত শরীর খারাপ।
তাকে জেল থেকে যেকোনো আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্তি দেওয়া হয় সেই প্রার্থনা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বিশেষ ক্ষমতায় তার প্রতি মায়া মমতা দেখিয়ে ৪০১ ধারায় দন্ডদেশ স্থগিত রেখে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছিলেন।
এখন আমি শুনি বিএনপিরা তাকে বেল দিতে হবে। আপনাদের সবাই তো এখানে আইনজীবী আমাকে বলুন তো মুক্ত মানুষকে আবার বেল দেয় কিভাবে। তাকে তো জেলখানা থেকে রাজনৈতিকভাবেই বের করে দেওয়া হয়েছে। তাকে আবার বেল দেওয়ার কি আছে বলুন তো। মনে রাখতে হবে হাইকোর্টের অ্যাপেলের ডিভিশন তাকে বেল দেয়নি। কোনো বেল দেওয়া হয়নি তাকে মুক্ত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান বার ভবন’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা গুলো বলেন। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি খবরের কাগজে দেখেছি বিএনপি’র নেতারা বিভিন্ন সমাবেশে বক্তব্যে তারা বলে থাকেন আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। ওনি তো মুক্ত আছেন। মুক্ত মানুষকে আবার বেল দেওয়ার কি আছে। তিনি তো মুক্তই আছেন তিনি তার বাসায় আছেন এবং প্রায় সময়েই হাসপাতালে যান চিকিৎসা নেন আবারও সুস্থ হয়ে বাসায় আসেন। উনাকে মুক্তি দেওয়ার কি আছে।
এখন আমরা শুনছি ওনাকে (খালেদা জিয়া) আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে বক্তব্য দেওয়াবেন। যে দুটি শর্তে উনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে সে দুটি সর্তে কিন্তু রাজনীতি বিষয় নাই। কিন্তু উনার যে আবেদন করা হয়েছিল সেখানে কিন্তু বলা হয়েছিল উনার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। উনি চলাফেরা করতে পারেন না। উনাকে অবশ্যই মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
তিনি যদি ১০ তারিখের প্রোগ্রামে যান তাহলে উনার যেই আবেদন করা হয়েছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত হবেনা। আপনাদের কাছে আমার এতটুকুই কথা। আমি আইনজীবী সোজা কথা ঘুরিয়ে বলি।
তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে আজকেও কিন্তু যারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তারা কিন্তু এখনো সোচ্চার। বঙ্গবন্ধুকে যেমনিভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশকে।
আবারো কিন্তু তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে সরকারের যে উন্নয়ন হয়েছে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে নষ্ট করার জন্য এবং বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করতে ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা আইনজীবী আপনারা কিন্তু সজাগ থাকবেন।
আইনমন্ত্রী নগরীর পুরান কোর্টস্থ নবনির্মিত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সব সময় আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের এই আবেদনটি আমি প্রধানমন্ত্রীর বরাবর প্রেরণ করব। বাকিটা আল্লার ইচ্ছা। আর নারায়ণগঞ্জে আপনারা বিদ্যুৎ আদালত চেয়েছেন তা আপনারা পাবেন। আপনার আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও ত্যাগ সব সময় অব্যাহত রাখবেন।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. রবিউল আমিন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাপার সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, জাপার সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও এটর্নী জেনারেল এড. এ এম আমিন উদ্দীন ও আইন মন্ত্রনালয়নের সচিব গোলাম সারোয়ার।
এ ছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামাছ জগলুল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মোহম্মদ শহীদ বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
আড়াইহাজারে গায়েবী মামলায় বিএনপির ২ কর্মী গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় পুলিশের দায়েরকৃত গায়েবী মামলায় বিএনপির ২ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে (২ ডিসেম্বর) নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার নতুন বান্টি এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে বিএনপি কর্মী মোহাম্মদ ইকবাল হাসান ও পুরিন্দা এলাকার মোহাম্মদ উদ্দিদের ছেলে ইছহাক।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক হাওলাদার জানান, বিএনিপর কিছু নেতাকর্মী গত রবিবার মশাল মিছিল, লাঠিসোটা, ককটেল ও মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে আড়াইহাজারের ইদবারদী বাসস্যান্ড থেকে আড়াইহাজারের দিকে অগ্রসর হয়ে ও রাস্তা অবরোধ, অ্যাম্বুলেন্স আটকে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করাতে পুলিশের ২ সদস্যকে আঘাত করে আহত করে। পরে এ ঘটনায় মামলা হয় এবং ওই মামলায় দুইজনকে আটক করা হয়।
আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জোবায়ের জিকু বলেন, সেদিন রাতে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা একটি বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতির সময় ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের আহত করে। হামলার পর আমাদের দুই ছাত্রদল কর্মীকে মারধর করে সেটির ভিডিও করে তারা। সেই ভিডিও ফেসবুকে এখনো আছে। আমাদের কর্মীদের মেরে পুলিশে দেওয়ার পর উল্টো আমাদের নামে গায়েবী মামলা করেছে। পুলিশকে মারধরের অভিযোগ পুরোই সাজানো ঘটনা।

এম আর কামাল
নারায়ণগঞ্জ
তারিখ ঃ ০২-১২-২০২২