খুন করে কি বেহেশতে যাওয়া যায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট: জুন ১০, ২০২১
0
ছবি সংগৃহীত

আমরা লেবাস সর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসে নই, আমরা ইনসাফ ইসলামে বিশ্বাস করি। যে ইসলাম জগৎবাসীকে ন্যায় ও সৎ আদর্শের শিক্ষা দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেন। কাকরাইলের ছোট মসজিদটি তাবলিগ জামায়াতকে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ব ইজতেমা যাতে বাংলাদেশে হয় সে জন্য টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানও ইসলামের রাস্তায় দিয়ে দেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ওআইসি সম্মেলনে যোগদান করে মুসলিম বিশ্বের সাথে সংযোগ স্থাপন করে দিয়ে যান বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ।

কিন্তু কিছু লোক ধর্মের নামে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করছে। শুধু আমাদের দেশেই না, পুরো বিশ্বেই ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বেড়ে গেছে বলে জানান প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, মানুষ খুন করলেই নাকি বেহেশতে চলে যাবে। এখন আমার প্রশ্ন, যারা এ পর্যন্ত খুন করেছে তারা কে কে বেহেশতে গেছে? কেউ কি বলতে পারবে? কেউ পারবে না। কিন্তু সবচেয়ে সর্বনাশ করে গেছে শান্তির ধর্ম ইসলামের।

‘আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর শ্রেষ্ট ধর্ম ইসলাম। কিন্তু কিছু লোক জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, খুন করে আমাদের এই পবিত্র ধর্মের বদনাম সৃষ্টি করছে। ফলে সারা বিশ্বে এই ধর্মের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। সাথে ইমেজটাও নষ্ট হচ্ছে। বিশ্বের কোথাও কিছু হলেই ইসলামের দোষ দেওয়া হয়।’

এসময় নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক যেসব সম্মেলনে গেছি, সেখানে যখনই ইসলামকে হেয় করা হয়েছে আমি তার প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য ইসলামের মতো একটা ধর্মকে অপরাধী করা যায় না।’ এজন্য জঙ্গিবাদের পথ থেকে যুব সমাজ থেকে শুরু করে সবাই যেন দূরে থাকে এ জন্য ইসলামী ব্যক্তিত্বসহ রাজনীবিদদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মানুষের সেবা করতে হবে, কল্যাণ করতে হবে। মানুষের ক্ষতি করে, হত্যা করে কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না। এটা ভুল কথা।’

বঙ্গবন্ধু ধর্মীয় স্বাধীনতা বিশ্বাস করতেন জানিয়ে তার কন্যা বলেন, ‘তিনি ইসলামে বিশ্বাস করতেন বলেই সংবিধানে ধর্মীয় নিরপেক্ষতার কথা বলেছেন। এটার অর্থ হচ্ছে, যার যার ধর্ম সে সে স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে। ধর্ম পালনের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন জাতির পিতা।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল সারাদেশে মডেল মসজিদ নির্মাণের। সে অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে সারাদেশে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল, ইসলামের সঠিক বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পবিত্র কোরআন-হাদিসের জ্ঞান অর্জনের জন্য কাজে লাগবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে একযোগে সারাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।