খুলনায় নববধূ ,জামালপুরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ : জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী মহিলা পরিষদের

আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২১
0

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ঈদে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে এক নববধু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ও ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করার এবং জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বখাটে কর্তৃক ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর সেই ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনে শাস্তি নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতি দিয়েছে।

আজ ২৭ জুলাই ও গত ২৬ জুলাই, ২০২১ তারিখ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি যে,
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ঈদে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে এক নববধু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ও ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায় যে, গত ২৪ জুলাই ২০২১ তারিখ শনিবার রাতে ডুমুরিয়া উপজেলার একটি গ্রামে ঈদে নববধু বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে তাকে বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে কামরুল ইসলামের ছেলে আল মামুন ওরফে রুবেল (২৮), আমজাদ হোসেন সরদারের ছেলে মাহফুজ হাসান (২০) ও আজিজুর রহমান মোল্লার ছেলে সাকিব মোল্লা (১৭) নববধুকে একা পেয়ে জোরপূর্বক পাশের একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে। নির্যাতনের শিকার নববধুকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নববধুর মা ডুমুরিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বখাটে কর্তৃক ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর সেই ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায় যে, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৯) প্রেমের ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। গত ২৩ জুলাই ২০২১ তারিখ ঐ কিশোরীকে আবারো ধর্ষণের প্রস্তাব দিলে কিশোরী তা প্রত্যাখ্যান করলে আতাহার আকন্দের ছেলে বখাটে সাব্বির রহমান ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা মাদারগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতায় লক্ষ্য করছে যে, বর্তমানে বাসস্থান, রাস্তা-ঘাট, গণপরিবহণসহ সর্বত্র নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে এবং নারী ও শিশুর স্বাধীন জীবন ও চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে অভিভাবকগণ সন্তানের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হচ্ছেন। এরূপ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী ও কন্যার নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।

উক্ত ঘটনাদ্বয়ের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে। ঘটনার শিকার নববধু ও কিশোরীর সুচিকিৎসাসহ তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছে। নারীর স্বাধীন চলাচল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের নিকট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সারাদেশে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।