নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণমসাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বুধবার বলেছেন, “চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিষ্ফোরণে নিহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে ও আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ফেরার পথে, বিকাল সাড়ে পাঁচটায় মধ্যযুগীয় কায়দায় আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে
নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা করে ও তাঁদের বহনকারী গাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ২০০৯-এ আপনি
ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের হাতে বই কলম তুলে দেন। কিন্তু আমরা দেখতে
পাই, ছাত্রলীগ বই কলম বাদ দিয়ে সারাদেশে দেশীয় অস্ত্র, হাতুড়ি, রাম দা ও
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে উঠিয়ে নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে। ছাত্রলীগ এখন
চাঁদাবাজ আর দানবলীগে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সিনিয়র নাগরিকগণ বারবার
ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরার জন্য অনেক বিবৃতি ও বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু
দেশবাসী অতীতে দেখেছেন ছাত্রলীগ কর্তৃক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে কোমলমতী
স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ওপর হাতুড়ি ও হকিস্টিক দিয়ে রক্তাক্ত করার
সচিত্র ছবি ও সংবাদ দেশ ও বিদেশে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি চাকরিতে
কোটা বিরোধী আন্দোলনেও ছাত্রলীগের সসস্ত্র হামলায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ
সারাদেশে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা নির্মম হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র চর্চায় সকল দল ও মতকে কথা বলার সমান
অধিকার না দিলে গণতন্ত্রের পথ বন্ধ হয়ে যায়। দেশে তৈরি হয় স্বৈরতন্ত্র ও
গণতন্ত্রহীনতা। যার কারণে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আপনার সরকারি
সংগঠন ছাড়া বিরোধী দলের কোন ছাত্র সংগঠনকে রাজনীতি করার অধিকার থেকে
বঞ্চিত করা হচ্ছে। পুলিশ ও ছাত্রলীগকে আপনার সরকার একাকার করে ফেলেছে।
চট্টগ্রামে পুলিশ ছিল নিরব দর্শক। যা সারাদেশে বিরাজমান। দেশের জনগণ এই
বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়, নিকট অতীতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ
কর্তৃক আবরার হত্যাকাণ্ড অন্যতম উদাহরণ। আপনার কাছে অনুরোধ গণতন্ত্র ও
ভোটের অধিকার এবং আগামী দিনের নতুন নেতৃত্ব বিকশিত করার জন্য জরুরি ছাত্র
সংসদ নির্বাচন দিন। আগামী বাহাত্তর ঘন্টার মধ্যে চট্টগ্রামে মেডিক্যাল
কলেজের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ ও
যুবলীগকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন , হামলায় গুরুতর আহত গণসংহতি আন্দোলনের
প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের নেতা রাশেদ খান, রাষ্ট্র
সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন, গণসংহতি আন্দোলনের
চট্টগ্রাম জেলার আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমি, গণ অধিকার পরিষদের নারী
নেত্রী ডলি, যুগ্ন আহ্বায়ক জসীম উদ্দীন আকাশ, ছাত্র অধিকার পরিষদের
কেন্দ্রীয় নেতা তৌহিদুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেত্রী আছিয়া খাতুন,
জারিয়া হাসানস হ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ দ্রুত আরোগ্য লাভ করে ভোটাধিকার,
আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। একই সাথে তিনি
ছাত্রলীগ ও যুবলীগের এই সসস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানান।“