“পাহাড়ের গাঁজা অভিনব কৌশলে যাচ্ছে সমতলে”
॥ চাষাবাদ হচ্ছে দূর্গম পাহাড়ে হাত ঘুরে ব্যবসায়ীদের কাছে ॥ অধারাই থেকে যাচ্ছে মুল হোতারা ॥
আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:: পাহাড়ের বিভিন্ন গোপন স্থানে চাষ করা গাঁজা (মারাত্মক নেশাজাত দ্রব্য) এবার যাচ্ছে সমতলে। আবার ভিন্ন কৌশলে তা প্রক্রিয়ায় প্যাকেটজাত ও কাঁচামালের সাথে তা পাচার করা হচ্ছে ফেনী হয়ে ঢাকাসহ দেশের সমতল জেলাগুলোতে। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এমনি একটি গাঁজা চালান আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩০বীর খাগড়াছড়ি সদর সেনা জোন।
বুধবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের ইয়ংড বৌদ্ধ বিহার এলাকা থেকে এ গাঁজার চালান নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার আগেই অভিযান চালিয়ে ২১ কেজি ১শ গ্রাম শুকনা গাঁজাসহ বাবুল চাকমা (৩৩) কে হাত নাতে আটক করে। যার আনুমানিক মূল্য ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এ সময় জব্দ করা হয় মাদক সরবরাহ কাজে ব্যবহৃত একটি মাহিদ্র গাড়ি। সে মহালছড়ি উপজেলার লেবুছড়ি এলাকার দেব রঞ্জন চাকমার ছেলে। ৩৭টি পলিথিনের মোড়কে এই গাঁজা মৌড়ানো ছিলো। সরবরাহকালে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দুটি কাগজের বক্সে লেচুপাতা ও উপরে গাঁজা রেখে তার উপরে পাকা বরই দিয়ে করা হয় প্যাকেট।
এতসবের পরও গোয়েন্দা ও সেনাবাহিনীদের চোখ ফাঁকি দেওয়ার মাদক কার্বারীদের অভিনব কৌশলী সফল হলো না। অবশেষে সেনাবাহিনীর অভিযানে আটকের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। আটককৃত গাঁজা সরবরাহকারী বাবুল চাকমাকে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী সূত্র।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রশিদ জানান, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে আটককৃত গাঁজা ও জব্দকৃত গাড়িসহ অভিযুক্ত বাবুল চাকমাকে থানা হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হচ্ছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এদিকে দূর্গম পাহাড়ে এসব গাঁজার চাষ হলেও তা হাত ঘরে সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাতে বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের। তারপরও অধরাই থেকে যাচ্ছে মাদক কারবারী ও মুল হোতারা। তাই পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক হারে চাষ হওয়া এসব গাঁজা ও মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে অভিযান চালানোর দাবী জানিয়ে স্থানীয়রা। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে মরণঘাতি মাদক ইয়াবা,বিদেশী মদ,চোলাই মদসহ বেড়ে চলা মাদক কারবারীদের আধিপত্য রোধে যথাযথ কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়ার দাবী করেছে স্থানীয় সচেতন মহল। নইলে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ,ঘটবে সামাজিক অবক্ষয়। তাই সেনাবাহিনী,পুলিশসহ প্রশাসনকে মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখে মাদক নিমূলের আহ্বান জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন অভিভাবকরা।
আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি