গাজীপুরে আবারো শ্রমিক অসন্তোষ, ফের কারখানা বন্ধ

আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২৩
0

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর \ গাজীপুরে বেতন ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে রবিবারেও বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় তারা ইটপাটকেল ছঁুড়ে একটি কারখানার দরজা জানালার কাঁচ ভাংচুর করে। দুপুরের পর হতে মহানগরীর কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি থানা এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে এদিন ওই এলাকার অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ন্যূনতম মজুরী ২৩ হাজার টাকা করার দাবীতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে আন্দোলন শুরু করে গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকেরা। গত কয়েকদিন আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করে। তারা উত্তেজিত হয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে তান্ডব চালায়। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে জেলার অধিকাংশ মিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে সরকার, মালিক, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সহ শ্রমিক সংগঠণের নেতৃবৃন্দ আলোচনায় বসেন। বৈঠকের সিদ্ধান্তানুযায়ী শনিবার হতে বন্ধ কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দেন।

জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম জানান, রবিবার সকাল হতে শ্রমিকরা কারখানায় কাজ শুরু করেন। দুপুরে খাবারের বিরতির পর মহানগরীর কাশিমপুর, জরুন ও কোনাবাড়ি এলাকার বেশ কয়েকটি শ্রমিকরা কারখানায় ফিরে কাজে যোগ না দিয়ে হঠাৎ বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের সঙ্গে আশেপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেয়। তারা মিছিল নিয়ে বিসিক এলাকা সহ কাশিমপুর, কোনাবাড়ি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা রিয়াজ ফ্যাশন গার্মেন্টসে ইটপাটকেল ছুঁড়ে দরজা জানালার কাঁচ ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ পানি স্প্রে করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গিয়ে অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এসময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরআগে সকালে মোল্লা মার্কেট এলাকার মিতালী ফ্যাশন লিঃ, হাতিমারা এলাকার কটন ক্লাব নীটওয়্যার, ও জিতার মোড় এলাকার কাইজার গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে কারখানায় যায়। তবে তারা ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবীতে কাজ বন্ধ রেখে কারখানার অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

জিএমপি’র কোনাবাড়ি জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, রবিবার দুপুরের খাবারের বিরতির পর কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কটন ক্লাব, মুন টেক্স, মাল্টি ফ্যাবস, রিপন গার্মেন্টস, ইসলাম গার্মেন্টস, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, আলীফ গুপ, কেয়া গ্রুপ ও এস্ট্রো গার্মেন্টস সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা এদিন দুপুরের পর হতে ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকদের ভাঙচুর না করে শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।
০৫/১১/২০২৩ ইং।