গাজীপুরে কলেজ ছাত্রী স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে রেখে স্বামীর পলায়ন, শ্বশুর আটক

আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২২
0

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরে কলেজ ছাত্রী স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে তার স্বামী পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বশুর রামনাথ রাজভরকে (৫৫) আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহতের নাম- বর্ষারাণী রাজভর (১৮)। তিনি গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম বিলাশপুর এলাকার বাদল রাজভরের মেয়ে এবং গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী।

নিহতের মা লক্ষী নারায়ন রাজভর জানান, গত বছরের মার্চে বর্ষারাণী প্রেম করে গাজীপুর মহানগরের উত্তর বিলাশপুর এলাকার রামনাথ রাজভরের বেকার ছেলে দীপ্ত রাজভর (২৪)কে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন বর্ষারাণীকে আমাদের বাড়িতে তেমন আসতে দিতেন না। এসএসসি পাশ করার পর এবার বর্ষাকে গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বর্ষা আরো লেখাপড়া করুক তা পছন্দ করে না। বর্ষাকে তার স্বামী-শ্বাশুড়ি বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য চাপ দিতেন। সর্বশেষ তারা দীপ্ত’র দাদিকে দিয়ে বর্ষার কাছে ৫লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দাবি করেছিল। এসব নিয়ে তাদের সংসারে বিভিন্ন সময় কলহ হতো। এসব বিষয় নিয়ে সোমবার রাত ৮টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামনাথ মোবাইলে ফোন করে আমাদের জানান, বর্ষা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। তাকে দেখার হাসপাতালে যেতে বলেন। আমরা রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। এসময় স্বামী দীপ্ত কাছে ছিল না। ঘটনার পর থেকে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বর্ষার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে।

জিএমপি’র সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সৈয়দ রাফিউল করিম জানান, নিহত বর্ষার কপালে ও গলার নিচে কালো দাগ রয়েছে। সোমবার রাতেই হাসপাতাল চত্বর থেকে দীপ্তর বাবা (নিহতের শ্বশুর) রামনাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বর্ষার স্বামী ও শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা না-কি আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাত পৌণে ১১টার দিকে মৃতাবস্থায় বর্ষার লাশ হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে গেছে তার স্বামী দীপ্ত। যা হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ রয়েছে। বর্ষার লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
###