গুম-খুনের জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচার চাইলেন ভিপি নূরের দল

আপডেট: এপ্রিল ১২, ২০২৩
0

ঢাকা প্রতিবেদক:
যারা স্বাধীন দেশের নাগরিকদেরকে গুম-খুন করছে আমরা যদি বেচেঁ থাকি তাহলে প্রতিটি গুম-খুনের বিচার হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন গণধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, গুম-খুন, অত্যাচার-নির্যাতনের সাথে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আমরা বেঁচে না থাকলে পরবর্তী প্রজন্ম এর বিচার করবে।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ভিন্নমত দমনে র‍্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকার কর্তৃক গুম, বিচারবর্হিভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে ব্যবহারের প্রতিবাদে’ মানববন্ধনের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘র‍্যাব বর্তমানে কারো কথা শুনছে না, একমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কথা ছাড়া। ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে র‍্যাব কিভাবে মানুষকে তুলে নিয়ে বর্বর অত্যাচার, নির্যাতন চালায়। কার্যত, র‍্যাব এখন আর কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় নেই, ভিন্নমত দমনে র‍্যাব এখন একটি দস্যু, খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তারা নাগরিকদের সুরক্ষার বদলে গুম করছে, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বদলে নাগরিকদের অধিকার হরণ করছে। তাই র‍্যাবকে অনতিবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে। র‍্যাবসহ গুম-খুনের সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। র‍্যাব বিএনপির সময়ে গঠিত হলেও আজ তারাও এর বিলুপ্ত চাচ্ছে। কারণ, বর্তমানে এই বাহিনীর হাতে কেউ নিরাপদ নয়। ডয়চে ভেলে কয়েকজন গুম-খুনের বিষয় উল্লেখ করেছে, কিন্তু বাস্তব অবস্থা আরো ভয়াবহ। যারা স্বাধীন দেশের নাগরিকদেরকে গুম-খুন করছে আমরা যদি বেঁচে থাকি তাহলে প্রতিটি গুম খুনের বিচার হবে। গুম-খুন, অত্যাচার-নির্যাতনের সাথে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আমরা বেঁচে না থাকলে পরবর্তী প্রজন্ম এর বিচার করবে।

গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুলহক নুর বলেন, ‘শুধু আমেরিকার নয়, দেশের গণতন্ত্রকামী জনতাসহ পৃথিবীর সকল সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের পতন চায়। কাজেই আপনার সময় শেষ।’

প্রথম আলো প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন প্রথম আলো নাকি দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু, জনগণের শত্রু। তার এই বক্তব্যের পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমর্থকরা প্রথম আলোর অফিসে হামলা করে পরিচয় দেয় তারা প্রধানমন্ত্রীর লোক বলে। এতে বুঝা যায় তারা কার নির্দেশে সেখানে গিয়েছিল। এসব বক্তব্যের পর নৈতিকভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকতে পারেন না। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন।

চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে নুর বলেন, এই আন্দোলনকে বেগবান করে আমরা যদি এক মাস রাস্তায় থাকতে পারি তাহলে এই অবৈধ সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এই আন্দোলনে বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দল, জামায়াত নাকি ভিপি নুরের গণঅধিকার পরিষদ নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেটার উত্তর না খুঁজে বরং ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে রাজপথে যারা আছে তাদের নেতৃত্বেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই ফয়সালা হবে আগামীতে দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিল তারা ক্ষমতায় গেলে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড ঘটবে না। অথচ তারা ক্ষমতায় আসার পর গত ১২ বছরে ৩ হাজারের বেশি বেশি বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

গণ অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম ফাহিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক পাঠান আজহার, সহকারী আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, থোয়াইচিং মং চাক, ফাতেমা তাসনিম, সহকারী সদস্য সচিব শেখ খায়রুল কবির প্রমুখ।