গুম-খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারকে নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিব

আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২২
0

গুম-খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারকে নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিবসহ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নেতা-কর্মীরা।

শনিবার ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এই ইফতার পার্টিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারের এই অনুষ্ঠানে কৃষক দলের পক্ষ থেকে গুম-খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের ৫০ পরিবারের সদস্যদের ঈদ উপহার দেয়া হয়।

ইফতারের পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে গুম ও খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তাহসিনা রুশদির লুনা, আফরোজা ইসলাম আঁখি, মুনিয়া আখতার, সাফা, উম্মে হাবিবা মিম অশ্রুসজল কন্ঠে তাদের মন-বেদনার কথা প্রকাশ করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে গুমের শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবারকে নিয়ে এক সাথে কৃষক দল এই ইফতার পার্টি করেছে সেজন্য কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানাই। জাতিসংঘের যে চার্টার সেই চার্টারে এ্যানফোর্স ডিজএ্যাপিয়ারেন্সকে বলা হয় চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধ।এই কাজটি আওয়ামী লীগ সরকার গত কয়েকবছর ধরে করেছে এবং এই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, গণতন্ত্রের জন্য যারা সংগ্রাম-লড়াই করছেন তাদেরকে গুম করেছে, খুন করেছে, হত্যা করেছে।”

‘‘ আজকে আপনাদের সামনে বসে আছেন আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীর স্ত্রী। ইলিয়াস আলী প্রায় ১০ বছর আমাদের মাঝ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। এখানে আরো অনেকে আছে ছো্ট ছোট বাচ্চা বাচ্চা মেয়ে তারা গত ৭/৮/১০ বছর তাদের বাবাকে খুঁজছে।এই্ রকম প্রায় ৬শ পরিবার আছে যে পরিবারগুলো তাদের পুত্রকে, তাদের স্বামীকে অথবা তাদের পিতাকে খুঁজছে কিন্তু তাদেরকে তারা পাচ্ছে না। এটা প্রমানিত সত্য যে, এদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তারা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং তারা গুম হয়ে আছে। যেই কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা র‌্যাবের ওপর এসেছে এবং অনেক কর্মকর্তার উপরে এসেছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে এই রমজানের দিনে এই কথা গুলো বলতে আমাদের ইচ্ছা হয় না তারপরেও বলতে হয় আমরা যদি এই সরকারকে সরাতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি তাহলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না।”

‘‘ আজকে সমস্ত অত্যাচার-নির্যাতন,হত্যা-গুম-খুন সব কিছু বন্ধ করতে হলে প্রথম যে বিষয়টি দরকার তা হচ্ছে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা এদের মানুষকে আন্দোলন- গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে করতে হবে। আসুন পরম করুনাময় আল্লাহতা‘লার দরবারে এই দোয়া করি এই যে শিশু তাদের পিতাকে খুঁজছে, এই যে স্ত্রী তাদের স্বামীকে খুঁজছে, এই যে মা তাদের সন্তানদের খুঁজছে আল্লাহতালা যেন তাদেরকে পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দেয়। আর আল্লাহতালা যেন আমাদেরকে শক্তি দেয় আমরা যেন এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে পারি।”

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় ইফতার অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, রুহুল কুদ্দুস তালুদার দুলু, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ অঙ্গসংগঠন ও কৃষক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।