গুরমার হাওরের বাঁধসহ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর বাঁধ পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী জাহিদ ফারুক

আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২২
0

ফারুক আহমেদ,ধর্মপাশা
গুরমার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধসহ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর বাঁধ পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি।

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন কালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর অবহেলা কারণে যদি বাঁধের ক্ষতি হয় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জে ৭২৭টি পিআইসি হয়েছে। নিয়ম হল স্থানীয় কৃষকদের পিআইসি’র সভাপতি রাখতে হবে এবং আরও কয়েকজন কৃষককে নিয়ে কাজ করা হবে। তবে সব কৃষকের পিআইসি’ কাজ করার ক্ষমতা নাই। সবার আর্থিক অবস্থা ভাল না। অনেকে বলেন যে, দেড়িতে কাজ শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানি দেড়িতে নামার কারণে কিছু কাজ দেড়িতে হয়েছে। কিন্তু সব পিআইসি’র কাজ ডেড়িতে হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় পানি ছিলো বিধায় দেড়িতে হয়েছে। কিন্তু বেশীরর ভাগ কাজ কিন্তু সময়মত হয়েছে। আপনারা দেখেন ৭২৭টা পিআইসি’র ভিতরে কয়টা ভেঙেছে? মাত্র তিনটা জাগায় ভেঙেছে। আর যে কয়টা ফাটল দেখা দিয়েছিল সে গুলো বন্ধ করে দিয়েছি। আপরা সমস্তগুলো দেখেন তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন যেটা শুরু হয়েছে সাংবাদিকরা এটার উপরে পুড়া দেশের জনগণকে আতঙ্কিত করতেছেন। এটা কিন্তু ঠিক না। আমি দেশবাসীর কাছে আহবান জানাবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আপনারা আরও নিজেকে সংবরণ করে এবং সঠিক তথ্যটা তুলে ধরেন। আমরা এখানে কাজ করতে আসছি জনগণের সেবা করতে আসছি। আমি এখানে যখন কাজ ছলছিল তখনও এসেছিলাম, আজকে আমি এসেছি, সেদিন উপমন্ত্রী মহোদয় ও সিনিয়র সচিব মহোদয় এসেছিল কাজ দেখে গেছি। আমাদের কাজ করতে দেন আমরা আপনাদের সহযোগীতা করতে আসছি জনগণের সেবা করতে আসছি। সঠিক তথ্যটা দিয়ে আমাদের সহযোগীতা করে। যদি কেও অপরাধী হয় তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
২০১৭ সালে ৮ জন পাউবো কর্মকর্তার অনিয়মের জন্য চাকরী থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

এছাড়া তিনি আরও বলেন, হাওর এলাকায় আমরা জানি যে এখানকার কৃষকরা একটিমাত্র ফসল করে থাকেন। ফসলটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ যেকোন সময়েই ফাস্ট ফ্লাড বা আগাম বন্যায় ফসল নষ্ট করতে পারে। এই বছর দেখা যাচ্ছে বন্যা একটা বেশী প্রবণতা, ফলে ইতিমধ্য সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বোরো জমির ধান তলিয়ে গেছে এবং অন্যান্য হাওরে ও পানি বাড়ছে। তবে কি হবে জানি না, স্রষ্টা বলতে পারবেন বাকিটা। তিনি বলেন, এই আগাম বণ্যায় যে সমস্ত কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বা হবেন তাদের জন্য আগামী বছর সরকারের তরফ থেকে বীজ ও সার বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে দেয়া হবে। যাতে করে কৃষকরা আগামী বছর সুন্দরভাবে বোরো ধান আবাদ করতে পারেন এবং অন্যান্য ধান আবাদ করতে চাইলে সেখানে ও সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতার কথা জানান। যেসমস্ত কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন তাদেরকে খাদ্য সহায়তা চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের যেভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছিল এবারো আর যদি কোন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্থ ১২ হাজার কৃষককে সহায়তা দেওয়া হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সাঈদ ও বিনা ধান-১৭ এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাকিব, ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান পলাশ।

এর আগে মন্ত্রী সকালে জেলার জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা উপজেলার হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করেন। বন্যা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সাথে কথা বলেন।