গ্রহ-নক্ষত্র আল্লাহর প্রবল শক্তির বহিঃপ্রকাশ

আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২২
0

মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা :

আসমান-জমিন, গ্রহ-নক্ষত্র সব কিছুর একমাত্র স্রষ্টা ও মালিক মহান আল্লাহ। তিনিই এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের রব হচ্ছেন সেই আল্লাহ, যিনি আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের ওপর সমাসীন হন।

তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, যাতে ওরা একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে ত্বরিতগতিতে; সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজি সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। জেনে রেখো, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই, আর হুকুমের একমাত্র মালিকও তিনি, সারা জাহানের রব আল্লাহ হলেন বরকতময়। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৪)

সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ তাঁর মাখলুকদের জন্য বিশাল আসমান বানিয়েই ক্ষান্ত হননি বরং তিনি একে আলোকমালা (গ্রহ-নক্ষত্র) দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছেন। এবং আকাশের পরিপূর্ণ নিরাপত্তাব্যবস্থায়ও তাদের নিয়োজিত করেছেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। ’ (সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ১২)

উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, তিনি এই বিশাল আকাশের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, তিনি মূলত তারকারাজির মাধ্যমে বিশাল এই আসমানকে শয়তান থেকে সুরক্ষিত রেখেছেন। তাঁদের এই ব্যাখ্যার পক্ষে অবশ্য আয়াত-ও আছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং ওগুলোকে করেছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি। ’ (সুরা : মুলক, আয়াত : ৫)

অর্থাৎ শয়তানদল যখন আসমানের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখন নক্ষত্রকে তাদের প্রতি উল্কারূপে নিক্ষেপ করা হয়।

শুধু তা-ই নয়, মহান আল্লাহর এই সৃষ্টিগুলোর পেছনে হাজারো রহস্য রয়েছে। তন্মধ্যে আরেকটি রহস্য হলো, মহান আল্লাহ এগুলোকে অন্ধকারে দিকনির্নয়ের মাধ্যম বানিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা সেগুলোর সাহায্যে জলে-স্থলে অন্ধকারে পথের দিশা লাভ করতে পারো। আমি আমার নিদর্শনগুলোকে জ্ঞানীদের জন্য বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি। ’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৯৭)

অনেকে আবার মনে করে, মানুষের ভাগ্যের সঙ্গে নক্ষত্রের যোগসূত্র রয়েছে। নক্ষত্রের প্রভাবে মানুষের ভাগ্য বদল হয়, বৃষ্টিপাত হয়—ইসলামের দৃষ্টিতে এই কথাগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা কি জান, তোমাদের রব কী বলেছেন? তিনি বলেছেন, আমি যখন আমার বান্দার ওপর অনুগ্রহ করি, তখনই তাদের একদল তা অস্বীকার করে এবং তারা বলে নক্ষত্র, নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের কাজ হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১৩৫)

উম্মাহ