চরফ্যাশন(ভোলা) প্রতিনিধি
চরফ্যাশনের গ্রামগঞ্জের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ঋণ দেয়ার নামে প্রতারনা করে ১হাজার গ্রাহক থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে ‘সকস বাংলাদেশ’ নামের একটি ভূয়া এনজিও । বুধবার সকালে ঋণ গ্রহীতা গ্রাহকরা ঋণ নিতে এসে চরফ্যাশন শরীফপাড়া এনজিওর অফিস তালাবদ্ধ দেখে হতাশায় ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী গ্রাহকরা থানায় অবস্থান নেন। ভুয়া এনজিওর খপ্পরে পরে স্বর্বশান্ত হয়ে পরেছেন উপজেলার ১ হাজার ঋণ প্রত্যাশী অসহায় মানুষ।
ভুক্তভোগিদের সুত্রে জানাযায়, প্রায় ১ মাস যাবত ‘সকস বাংলাদেশ’ নামের একটি ভুয়া এনজিওর কয়েকজন মাঠ কর্মী ঋণ দেয়ার নামের পৌর সদরসহ মাদ্রাজ, আসলামপুর, জিন্নগড় এই ৪টি ইউনিয়নে প্রচারনা শুরু করেন। এবং আগ্রহী গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রীম সঞ্চয় বাবদ ১০ হাজার দুইশ টাকা করে উত্তোলন করেন। এবং অফিসে কর্মী নিয়োগের জন্য ৪ জনের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায় করে নেন। গত শুক্রবার সদরের শরিফপাড়ার একটি বাসায় প্রত্যেক ওয়ার্ডের ১০ সদস্য নিয়ে গঠন করা কেন্দ্র প্রধানদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে অফিস উদ্বোধণ করে মঙ্গলবার ঋণ দেয়ার দিন ধার্য করেন। পরশু মঙ্গলবার সকলে বিভিন্ন ইউনিয়নে থেকে আসা ভুক্তভোগী ঋণ গ্রহীতরা এনজিওর দেয়া ঠিকানা মতে অফিসে এলে দেখেন ঘরটি তালাবদ্ধ নেই কোন সাইন বোর্ড। অফিসের সামনে পুর্বের দেয়া সাইনবোর্ডটি সরিয়ে পেলে পালিয়ে যান ওই এনজিওর কর্মীরা।
পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী নারী শাহানুর জানান,‘সকস বাংলাদেশ’ নামের একটি এনজির দুই জন মাঠ কর্মী তাদের বাড়িতে যান। এবং জন প্রতি ১ লক্ষ টাকা করে ঋণ দিবেন এমন অজুহাতে ওই গ্রামে একটি কেন্দ্রে ১০ জন সদস্য সংগ্রহ করেন। এবং সদস্য প্রতি অগ্রীম সঞ্চয় হিসাবে ১০ হাজার টাকা এবং সদস্য ফি বাবদ ২শ টাকা করে উত্তোলন করেন। গ্রাম থেকে সুদে ১০ হাজার ২ টাকা নিয়ে এনজিও কর্মীদের অগ্রীম সঞ্চয়ের টাকা পরিষোধ করেন তিনি। মঙ্গলবার ঋণ দেয়ার কথা ছিলো কিন্তু তারা ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিস ঘরটি তালাবদ্ধ নেই কোন সাইনবোর্ড কর্মীদের মোবাইল ফোন ও বন্ধ করে রেখেছে। নিরুপায় হয়ে তিনি এবং অপর ভোক্তভুগী নারী পুরুষরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানান। একই ভাবে মিনারা , ইয়ানুর, শাহানুর, নুরুল ইসলাম ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১হাজার নারী পুরুষ ভুয়া এনজিওর প্রতারনার খপ্পরে পরে স্বর্বশান্ত হয়েছেন।
উত্তর মাদ্রাজ গ্রামের মিনারা বেগম জানান,ওই এনজিও কার্মীরা তার ছেলে আসিফকে অফিস সহায়ক হিসাবে নিয়োগ দিবেন বলে তার কাছে ৪০ হাজার টাকার দাবী করেন। ছেলের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে তার দিনমুজুর স্বামী একটি গাভী গরু বিক্রি করে তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা দেন। ছেলের চাকুরীতো দুরের কথা অফিসে এসে দেখে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও কর্মীরা পলিয়েছেন। একই ভাবে নাজিউর, রহিম , আকবর ,নামের আরো তিন যুবককে চাকুরী দেয়ার নামের ৪০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন ভূয়া এনজিও কর্মীরা।
ঘর মালিক ইউনুছ চৌধুরী জানান, ঘর ভাড়ার চুক্তির কথা থাকলেও ওই এনজিও কর্মীরা ভাড়ার কোন চুক্তি না করেই পালিয়ে গেছেন।
চরফ্যাশন থানার ওসি মো. মনির হোসেন মিয়া জানান, ভুক্তভোগীরা সকালে থানায় এসে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।