চরফ্যাশনে নিখোঁজ ২০জনের মধ্যে ৩ জেলের সন্ধান

আপডেট: ডিসেম্বর ১২, ২০২১
0
ক্যাপশনঃ চরফ্যাশনে আবদুল্লাহপুরের নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারি করেছে নুরুল ইসলামের পরিবার।


জাহাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা

চরফ্যাশন (ভোলা)প্রতিনিধি
চরফ্যাশনের ঢালচরের দক্ষিণে সাগর মোহনায় ট্রলিং জাহাজের ধাক্কায় মাছ ধরা ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ২১ জেলের মধ্যে উদ্ধার হওয়া হাফিজের তথ্য অনুযায়ী ঘাতক ট্রলিং জাহাজটির নাম জানা গেছে। উক্ত ঘটনার ৬ দিন পর ৩ জেলের সন্ধান মিলেছে। নিখোঁজ শাহিন তার পিতা সেকান্দার ওরফে সিডু মাঝিকে শনিবার দুপুর ১২টার সময় ফোন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহিনের পিতা সেকান্দার ওরফে সিডু মাঝির সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, শনিবার দুপুর ১২টার সময় ০১৭৬৮০৯৯৭৩৫ নাম্বার থেকে শাহিন ফোন করে জানান, তারা কক্সবাজারের একটি মাছ ধরার ট্রলারে রসুলপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ডের সেকান্দার বেপারীর ছেলে মো. শাহিন, আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের খালেক, চরমানিকা ইউনিয়নে ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত হানিফ মুন্সীর ছেলে হারুন আছেন ।
তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বাচ্ছু মাঝি, আলামিন মাঝি, ফারুক হাওলাদার, জাবেদ, খালেক, ইউছুফ মৌলভী, জসিম জমাদার, রফিক, মাসুদ, বাচ্চু, নুরুল ইসলাম, নুরে আলম, আবুল বাসার, সুমন, দিন ইসলাম, নাগর মাঝি, মো. আলী, মিজান। এসব নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান না পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হাফিজ বাদী হয়ে এফবি এসআরএল -৫ নামের ট্রলিং জাহাজের কর্তৃপক্ষকসহ অজ্ঞাতনামা আসামী করে দক্ষিণ আইচা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
দক্ষিণ আইচা থানা দায়ের করা মামলাটি তদন্তের জন্য ভোলার মির্জাকালু নৌ-পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হস্তান্তর করেছেন বলে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি মো. সাখাওয়াত হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
এজাহারে বাদী হাফেজ আহামেদ দাবি করেন, ঘটনার রাতে তারা মাছ ধরার কাজে সাগরে ছিলেন। আবহাওয়ার সংকেত শুনে তারা (জেলেরা) তীরে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি এবং অপর জেলেরা ট্রলারের ওপরে দাড়িয়ে ছিলেন।
এসময়ে বিপরিত দিক থেকে আসা এফবি এসআরএল-৫ নামের ট্রলিং জাহাজ (মাছ ধরার স্টিল বডির বিশেষ জাহাজ) তাদের ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে মুহূর্তের মধ্যে ট্রলারে থাকা জেলেরা গভীর সাগরে ছিটকে পড়ে। দুর্ঘটনার কবল থেকে তাদের উদ্ধারে আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের সামছল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের মাঝি আলাউদ্দিন এগিয়ে এসে সার্চ লাইটে ওই ট্রলিং জাহাজটির নাম দেখতে পায়। পরে ট্রলিং জাহাজটি তাদেরকে ধাওয়া করলে ট্রলারের মাঝি আলাউদ্দিন সাগরে ভাসমান জেলেদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। তীব্র ¯্রােতের টানে সাগরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভেসে যায় অপর জেলেরা। তিনি তাদের ট্রলার থেকে ভেঙে যাওয়া একটি কাঠের ফালা ধরে সাগরে ভাসতে থাকেন। রাতভর সাগরে ভেসে থাকার পর সকালে মহিপুর ঘাটের একটি মাছ ধরা ট্রলার তাকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসেন। ট্রলিং জাহাজটির নাম শনাক্ত হওয়ায় তিনি বাদী হয়ে ট্রলিং জাহাজের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ঘটনার ৬ দিনেও ২০ জেলের লাশের অপেক্ষায় স্বজনগন নদীর পাড়ে পাড়ে ঘুরছে। আবদুল্লাহপুরের সুলতান জানান, তার জামাতাকে খোজার জন্যে আজ ৫ দিন পর্যন্ত মেঘনা ও ঢালচর চরকচ্চফিয়া খোঁজা হচ্ছে। স্বজনকে কান্নায় ওই এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ ও ঢালচরের পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের লাশ খোঁজার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।