চরম শ্রমিক সংকটে সময়মতো ঘরে তুলতে পারছেনা ধান ঝিনাইদহের কৃষকরা

আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ

লকডাউনের কারণে বাইরে থেকে শ্রমিক না আসায় পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক। আবহাওয়া এখনো অনুকুলে আছে। আকাশে মেঘ ডাকলেই মনের মধ্যে দুরু দুরু করে কাপে না জানি কখন কাল বৈশাখী ঝড়ে সব লন্ড ভন্ড করে দেয়। তাই কৃষকরা পাকা ধান কাটা নিয়ে চরম শংকায় পড়েছেন।ধান কাটা শ্রমিক বর্তমানে ৫০০ থেকে ৬০০টাকাও মিলছে না। কদিন আগেও শহরে দল বেঁধে শ্রমের জন্য বসে থাকতো আজকে সেখানে এক জনও খুজে পাওয়া যাবেনা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রায় দ্বিগুণের বেশি বোরো ধান আবাদ করেছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ বোরো আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত ও আগ্রহ বৃদ্ধি করতে কৃষকদের মাঝে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের বীজ সরবরাহ করেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ঝিনাইদহ খামার বাড়ির সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় এবার ৮০হাজার ২৮৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করছেন কৃষকরা। বাজারে ধানের দাম ভাল ও ফলন মোটামুটি ভাল হওয়ায় কৃষকরা বোরো আবাদের প্রতি বেশি ঝুকেছেন।

জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াদাহ, তাহেরহুদা, দৌলতপুর, সদর উপজেলার সাধুহাটী, মধুহাটী, সাগান্না, গান্না, মহারাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে জানা গেছে, কৃষকরা জমির ধান কাটাতে পর্যাপ্ত শ্রমিক পাচ্ছে না। যদিও কিছু পাওয়া যাচ্ছে তার মজুরীর দামও দ্বিগুন থেকে তিনগুন হাকছে শ্রমিকরা। সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, আমার ৫বিঘা জমিতে ধানের আবাদ আছে বৈশাখ মাসের প্রথম দিকেই ধান কাঁটার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু জন(শ্রমিক) না পাওয়ার কারণে কাটতে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছি।

হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের কবির মন্ডল, মুকুল হোসেনসহ অনেকেই বলেন, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকলেও বিভিন্ন রোগ বালাই এবং কৃষি শ্রমিকের অধিক মূল্যের কারণে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে।এখন জেলার অধিকাংশ কৃষকের ধান বাড়িতে নেওয়ার আগ পর্যন্ত নির্ঘূম রাত কাটছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান আমরা কৃষকদের পাশে সার্বক্ষণিক থেকে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছি জেলায় এবার ৭৭হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা থাকলেও সেখানে জেলায় ৮০হাজার ২৮৪ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ফলনও ভাল হবে বলে আশাকরি। ইতমধ্যে ২৫ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। খুব দ্রুত বাকি ধান কাটার জন্য আমরা মাইকিং করছি।

কৃষকদের কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছি কিন্তু কৃষকরা বিচলির আশায় মেশিনে ধান কাটতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছর কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও জানান, আবহাওয়ার পরিবর্তন ফলে কয়েকদিন আগে ঝড়ো হাওয়ায় বেশকিছু জমির ধানে চিটা হয়েছে। কিছু ফলন কমে যেতে পারে বলে কৃষি অফিস থেকে ধারনা করা হচ্ছে। তবে তাদেরকে সরকারী প্রনোদনার আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক