চালককে খুন করে ভাড়া পিকআপ ডাকাতি, গ্রেফতার ৫

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১
0

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে মালামাল নেওয়ার কথা বলে চালককে খুন করে ভাড়া নেওয়া পিকআপ ডাকাতি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের এ সদস্যদেরকে গাজীপুর ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থান হতে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ডাকাতিকৃত ৭টি পিকআপ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার জিএমপি’র অতিরিক্ত উপ কমিশনার (অপরাধ) রেজওয়ান আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- হবিগঞ্জের বাহুবল থানার দৌলতপুর এলাকার আব্দুল বাসেদের ছেলে মারুফ হোসেন (৩০), ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানার সানন্দখীলা এলাকার হারেস আলীর ছেলে এনামুল (২২), শেরপুর জেলা সদর থানার টিকারচর এলাকার মৃত মোতালেবের ছেলে আমিনুল (২৪), টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার খড়রিয়া এলাকার মোঃ রফিজ মন্ডলের ছেলে শামীম (২৪) ও হবিগঞ্জের বাহুবল থানার চারিগাঁও এলাকার মৃত রমিজ আলীর ছেলে আব্দুল আহাদ (৩৪)। গ্রেফতারকৃত আহাদ বাদে অন্যরা সবাই গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর সিটি কপোর্রেশনের বাসন থানাধীন বারবৈকা মধ্যপাড়া রাস্তার পাশে জাকিরের বাগানের ভিতর থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাত একজন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে ওই থানার এস আই মোস্তফা কামাল বাদী মামলা করেন। পরদিন নিহতের লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার। শনাক্ত অনুযায়ী নিহতের নাম সেলিম সরদার (৩৩)। সে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার পশ্চিম উদয়নগর এলাকার শাহ জামাল সরদারের ছেলে। সেলিম গাজীপুর সদর উপজেলার বেগমপুর (ফুয়াং গেট) এলাকায় স্বপরিবারে ভাড়া থাকত। গত ৩১ আগস্ট নিজের মালিকানাধীন পিকআপ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেলিম মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে জানায় সব্জি কিনে বাসায় ফিরছে। কিন্তু রাতে সে আর বাসায় ফিরে নি। মামলা দায়ের এবং পরিচয় সনাক্তের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জিএমপি’র বাসন ও সদর থানা পুলিশ যৌথভাবে রবিবার ভোর পর্যন্ত গাজীপুর ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে চালিয়ে ওই ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ওই পিকআপসহ গাজীপুর ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্নসময় ডাকাতি করা মোট ৭টি পিকআপ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে আসামীরা ওই হত্যাকান্ডসহ আরো পিকআপ ডাকাতিতে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা গাড়ি ডাকাত দলের সদস্য। তাদেও বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা মালামাল নেওয়ার কথা বলে রাতে বিভিন্ন এলাকা হতে গাড়ি ভাড়া করে। পওে তারা চালক ও হেলপারকে খুন করে বা মারধর করে ভাড়া নেওয়া গাড়ি ডাকাতি করে নিয়ে যায়।

রেজওয়ান আহমেদ আরো বলেন, গত ৩১আগস্ট রাত ১১দিকে মহানগরীর ভোগরা বাইপাস মোড় থেকে বোরহান ও মারুফ ১৩শ’ টাকায় মাওনা যাওয়ার জন্য সেলিমের পিকআপ ভাড়া করে। তারা ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মিক্সার মেশিন নেওয়ার কথা বলে কৌশলে সেলিমকে বাসন থানাধীন শাহ আলম বাড়ী এলাকার ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ওৎপেতে থাকা আমিনুল, এনামুল ও শামীমের সহযোগীতায় সেলিমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশের হাত-পা বেঁধে ঘটনাস্থলে ফেলে সেলিমের পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। মারুফ একা পিকআপটি চালিয়ে আশুগঞ্জে গিয়ে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সহযোগী আহাদের কাছে গাড়ি হস্তান্তর করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে।

জিএমপি’র অপরাধ উত্তর বিভাগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রেস ব্রিফিং কালে জিএমপি’র সদর জোনের সহকারি কমিশনার রিপন চন্দ্র সরকার, সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, বাসন থানর ওসি মালেক খসরু খান ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।