চালের দামে দিশেহারা মানুষ: লাইন বাড়ছে ওএমএসের দোকানে

আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২১
0

বাজারে সব ধরনের চালের দাম বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে। ভোজ্য তেলের দামেও একই অবস্থা। অন্যদিকে করোনায় মানুষের আয় কমেছে।

গবেষণা সংস্থা সিপিডির জরিপে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। এই অবস্থায় সরকারি ওএমএসের দোকানে বা ট্রাকের সামনে চাল আটা ও তেল ক্রয়ের জন্য মানুষের ভীর বাড়ছে। এটি শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই চালের দোকানে মানুষের লম্বা লাইন।

ঢাকার বাজারে মোটা চাল মাত্র ১ মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫-৬ টাকা। কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। চিকন চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আমনের মৌসুম বুরোর চালের মৌসুম চললেও চালের মুল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি হয়েছে গত ১ বছরে ১৩ শতাংশ। যদিও কৃষি বিপনন অধিদপ্তর কৃষকের উৎপাদন খরচ থেকে শুরু করে বাজার জাতকরন পর্যন্ত সকল পর্যায়ের খরচ যোগ করেও চালের মূল্য এত বৃদ্ধির কোন কারণ খোঁজে পায়নি। তাদের হিসাবে ১ কেজি মোটা চালের মূল্য সর্ব্বোচ হতে পারে ৪০ টাকা। চিকন চালের মূল্য হতে পারে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা।

খাদ্য অধিদপ্তরের বিপনন বিভাগের পরিচালক জানান, চালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা ট্রাক সেল বৃদ্ধি করেছেন। আগে ঢাকায় ১০ টি ট্রাকে করে চাল ও আটা বিক্রি করা হতো এখন ২০টি ট্রাকে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে প্রতিদিন ৩ টন চাল ও ২ টন আটা বিক্রি করা হয়। একই সঙ্গে ওএমএসের দোকানের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তর ৩০ টাকা কেজি চাল ও ১৮ টাকায় আটা বিক্রি করেছে।

ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিবি) ভোজ্য তেল, চিনি ও মুশুর ডাল বিক্রি করে কম মূল্যে। বাজারের চেয় ৫০ টাকা কম মূল্যে ভোজ্য তেল ও ২০ টাকা কমে মুশুরি ডাল বিক্রি করা হয়। টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, তাদের পণ্যেরও চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে আগে ৪০০ ট্রাকে পণ্য বিক্রি হতো এখন ৪৫০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ট্রাকে ১ হাজার লিটার তেল, ৪০০ কেটি ডাল ও ৭০০ কেজি চিনি দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, দেশে চাল উৎপাদন হয় সাড়ে ৩ কোটি টন। এই চালে খাদ্য চাহিদা মিটিয়েও আরো প্রায় ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ব রয়েছে। এরমাঝে গত বছর আরো প্রায় ৬লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। তারপরেও বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বেসরকারি পর্যায়ে চালের স্টককেই দায়ি করছেন অনেকেই। ভোজ্য তেলের আন্তর্জাতিক বাজার চড়া। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মূল্য বৃদ্ধি করেছে উৎপাদকেরা।

অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মানুষের আয় কমেছে। সরকারি হিসাবেই বলা হয়েছে ২০১৯ সালের ৮.১৫ জিডিপি কমে ২০ সালে সাড়ে ৫ হয়েছে । আর এখন বলছে ৭.২। তার মানে হলো ২০১৯ সালের উৎপাদনে আমরা যেতে পারিনি। করোনায় এরচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

গরীব মানুষ যাতে ভাতটা খেতে পারে। খাদ্যবিক্রির ট্রাকের সামনে মানুষের লম্বা লাইন আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা আসলে কত বড় সংকটে আছি। সরকারের উচিৎ এই গরীবদের জন্য প্রত্যক্ষ্য সহায়তা দেওয়া ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।