চিত্রা নদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকোই এখন হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা

আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২১
0

জাহিদুর রহমান তারিক, স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে চিত্রা নদীতে দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ করা হয়নি। যে কারণে এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকোই কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে নদী পারাপার হতে হয়। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে সেখানে একটি আরসিসি সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের ও হাইস্কুলের পাশ দিয়ে চিত্রা নদী প্রবাহিত। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকার কয়েক গ্রামের মানুষ বাশের সাকো তৈরি করে চলাচল করে থাকে।

স্থানীয় লোকজন নিরুপায় হয়ে নদী পারাপারের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন সাঁকোর উপর দিয়ে একতারপুর,জাটারপাড়া,মঙ্গলপৌতা,ঘোপপাড়া,পারখিদ্দা,গয়েশপুর,মনোহরপুরসহ অন্তত ১২ গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে থাকে। একতারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনয় কুমার বলেন, ‘এই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে কয়েকটি গ্রামের ছাত্র ছাত্রীদের একতারপুর হাইস্কুল,বিএসবি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,ষাটবাড়িয়া আলিম মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রধান শিক্ষক বিনয় বাবু তার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রিদের সাকো দিয়ে চলাচলের কারণে বেতন ফ্রি পর্যন্ত করে দিয়েছেন।

আবার সাকো তৈরি করতে প্রতিবার তিনি ৫ হাজার করে টাকা দিয়ে থাকেন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাকদের কথা চিন্তা করে। এলাকাবাসীর বিকল্প কোনো পথ না থাকায় এই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় গ্রাম বাসীদের। বিকল্প রাস্তা দিয়ে যতে হলে অন্তত ৫ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত সাঁকোটি প্রতি বছর মেরামত করেন নিজেরাই। তবে এর একটি স্থায়ী সমাধান চান এলাকার বাসিন্দারা। এলাকাবাসী বলছেন এক-দুই দিনের নয়, বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামের মানুষকে। বর্ষায় এ দুর্ভোগ পৌঁছায় আরও চরমে। সাঁকো মেরামতে সরকারি কোনো অনুদানও পাওয়া যায় না। গ্রামবাসি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন, চাঁদা তুলে কেনেন বাঁশ-খুটি। তাই অবিলম্বে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জানায় প্রতিনিয়ত তাদের এই সাঁকোর উপর দিয়েই পারাপার হতে হয়। ইতঃপূর্বে অনেকবার এলাকাবাসী বিভিন্ন স্থানে ধর্না দিয়েছেন একটি ব্রিজের জন্য কিন্তু তাদের ভাগ্যে জোটেনি স্থায়ী চলাচলের ব্রীজ। এ চিত্রা নদীতে বছরে প্রায় ৮/৯ মাস পানি থাকে,যে কারণে সাকোর উপর দিয়ে চলাচল একমাত্র তাদের ভরসা। গয়েশপুর ও বনখিদ্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সাকো দিয়ে চলাচল করে থাকে।

আবার পার্শবর্তী খোড়ার বাজার, একতারপুর বাজারে আসতে হয় এ বাশের সাকো দিয়ে। তাদের কে কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ,যশোরসহ দেশের বিভিন্ন যাতায়াতের একমাত্র চলাচলের ভরসা এই সাকো। অন্যথায় সাকো ছাড়া যেতে হলে অন্তত ৫ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয় এলাকাবাসির। এলাকার মানুষ দেস্বাধীনের পর থেকেই এভাবে বাশের সাকো দিয়েই চলাচল করছে একটি ব্রীজের অভাবে।

মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক,
ঝিনাইদহ সদর অফিস,