ছাত্রদলের তিন নেতাকে গ্রেফতারের পর হদিস দিচ্ছে না পুলিশ — এমরান সালেহ প্রিন্স

আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২১
0

বিএনপি অভিযোগ করেছে , ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রুমীকে গতরাত ১০টায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত তাদের কোন হদিস দিচ্ছে না।

ঘটনার পরপরই গতরাতে বিএনপি মহাসচিব এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তাদের সন্ধান দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু এখনও তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ‘

আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স তিনি এ অভিযোগ করেন।

এমরান সালেহ এধরণের লোমহর্ষক কর্মকান্ড একমাত্র কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী সরকার দ্বারাই সংঘটিত হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে তাদেরকে জনসম্মুখে হাজির এবং নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।

মধ্যরাতের ভোটের পর আওয়ামী সংগঠনগুলো এখন বেপরোয়া, মনুষ্যত্বহীন, লাগামহীন, উদ্ধত এক মূর্তিমান আতঙ্ক। এদের কারনে বাংলাদেশে এখন ঘাতক ও মৃত্যুরই সহাবস্থান। দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর জানমাল এখন নিরাপত্তাহীন। স্বাধীনতা শুধু ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের। আওয়ামী রাজনীতির যাঁতাকলে প্রতিনিয়ত নিষ্পেষিত হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষ, ভিন্নমতের মানুষ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ।

মধ্যরাতের ভোটের সরকারের প্রভাবেই সমাজে অপরাধপ্রবণতা বিশ্বের সকল দৃষ্টান্তকে হার মানিয়েছে। বাংলাদেশ এখন কর্তৃত্ববাদী ভয়াবহ দুঃশাসনের আগুনে জ¦লছে। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন রক্তের হোলি খেলায় মত্ত।

এমরান সালেহগ প্রিন্স আরো বলেন , অবৈধ মিডনাইট সরকার দেশকে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মতো পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ধর্ষণ, নারী নির্যাতন-খুন-দখল ও গুমের উৎসবে মেতে উঠেছে। দেশে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। কোভিড-১৯ করোনা মহামারিতে দ্বিগবিদিক জ্ঞানশুন্য মানুষ চরম অসহায় ও দুর্বিপাকগ্রস্ত হয়ে পড়লেও সরকার করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ তো করছেই না, বরং জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার ও তাদের ওপর জুলুম নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে।

দেশ পরিচালনার মতো করোনা মোকাবেলাতেও সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এখন টিকা সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনাতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। করোনা নিয়ে সরকারের ব্যর্থতা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা দেশ-বিদেশে সমালোচিত হচ্ছে। অথচ বিএনপি নিজস্ব সামর্থ্য নিয়ে করোনা রোগীদের সহযোগিতায় ঔষধ, অক্সিজেন, খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে। বিএনপি’র এই মানবিক উদ্যোগেও আওয়ামী দুর্বৃত্তরা হামলা চালাচ্ছে, বাধা দিচ্ছে।

বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলকারী ব্যর্থ সরকার কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সব কিছুই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের নিকট তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই। করোনায় অসহায় মানুষকে রক্ষা নয়, বরং জনগণ তাদের বিপক্ষে বলেই তারা জনগণকে শত্রু ভেবে বিভিন্ন কায়দায় জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা বলে থাকেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
দলের পক্ষ থেকে আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বলে কিচ্ছু নেই, তাদের জনপ্রিয়তা এখন শুণ্যের কোঠায়। পুলিশের বন্দুক আর গুম-খুন-মামলা-জেল দিয়ে ভয়ঙ্কর শাসন কায়েম করে মানুষকে দমন করা হচ্ছে। সৎ সাহস থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য এর আগেও আমরা আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলাম।

কিন্তু সরকার সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভীত হয়ে নিজেদের সরকারের অধীনে অনুগত প্রশাসনের মাধ্যমে দিনের ভোট রাতে অনুষ্ঠিত করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কলঙ্কিত ও ব্যর্থ করে দিয়েছে। আমরা এখনও সরকারকে আহবান জানাই-এতই যদি জনপ্রিয়তা বেড়ে থাকে তাহলে এখন ক্ষমতা ছেড়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। এদেশের জনগণ আপনাদের জনপ্রিয়তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।