জনগণের নয়, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে আ.লীগ নেতাদের: রিজভী

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২২
0
file photo

জনগণের ক্রয় ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি। ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে হাছান মাহমুদ-ওবায়দুল কাদেরের, বেড়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগের। জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে টিসিবির ট্রাকের পেছনে এত বড় লাইন হতো না। এসব কথা বলে মন্ত্রীরা জনগণের সাথে রসিকতা করছে।

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্দ্যোগে রাজধানীর শাহবাগস্থ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিপলেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী কেন ক্ষমতা ছাড়ছেন না, এসময় তার কারণও জানান রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে নিয়ে অনেক সবক দিচ্ছেন। কেন উনি (প্রধানমন্ত্রী) ক্ষমতা ছাড়ছেন না? কেন উনি গদি ছাড়ছেন না? কারন উনি (শেখ হাসিনা) ক্ষমতা থেকে সরে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ দলটির সিনিয়র নেতারা দখল করবেন। এই ভয়ে তিনি জোর করে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে বসে আছেন। বিশ্বের নিষ্ঠুরতম সরকাররা যা করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তিনিও তাই করছেন।

বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, জনগণকে ক্ষুদা, দারিদ্রতার মধ্যে ফেলে দিয়ে সরকার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি দেখা দিয়েছে। গণবিরোধী এই সরকার, জনগণ খেয়ে পড়ে বাঁচলো কিনা এটা তাগিদ দেওয়ার কোন কিছু মনে করেনা। দেশে আজ যদি নির্বাচিত সরকার থাকতো, তাদের একাউন্টিবিলিটি থাকতো, তাহলে যেভাবেই হোক এটা নিয়ন্ত্রণ করত।

তিনি বলেন, আজকে গণমাধ্যমে আসছে মানুষ দুপুর বেলা ভাতের বদলে বন রুটি ও কলা খেয়ে থাকছে। একেবারে দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। জনগণকে অনিদ্রায় রেখে শুধু নিজের ও নিজের লোকদের ভালো করছেন। নিজের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার, ডুপ্লেক্স বাড়ি করার ব্যবস্থা করছেন। আর দেশের মানুষ কোন রকম ভাবে কলা-রুটি খেয়ে বেঁচে থাকে। তাও আবার সরকারি চাকরিজীবী মধ্যম আয়ের মানুষ। আগে যারা মেসে থাকতো তারা একটা ডিম ভেজে ভাত খেত, সেই ডিম ভেজে ভাগ করার মত সামর্থ্য মধ্যম আয়ের মানুষের নাই। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বাদই দিলাম।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, এরা দুর্ভিক্ষের বিলাসবহুল অবস্থা দেখতে চায়। নিজেরা ভালো থেকে দুর্ভিক্ষের বিলাসবহুল রূপান্তর করতে চায়। তাদেরতো খাবারের কোন অভাব নেই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে রাস্তা, ফুটপাতে ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলে মানুষ খেয়েছে। এখন সেই পরিনিতি আমরা আবার দেখছি এই শেখ হাসিনার আমলে। আমরা ‘৭৫ দেখেছি এখন শেখ হাসিনাকে দেখছি। তার বাবার আমলে যা হয়েছে এখন তার আমলেও হতে যাচ্ছে।

‘বিএনপির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে’ মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিদিন হামলা-মামলার শিকার হচ্ছে। সিন্ডিকেট গোটা মাফিয়া চক্র সব তারাই। ক্যাসিনো জুয়া সমস্ত সিন্ডিকেটের মালিক তারা। এবং তারা কারা তাদের নামও তো আপনাদের গণমাধ্যমে এসেছে। সুতরাং এগুলো তারা বিভ্রান্ত করার জন্য বলেন কিন্তু মানুষ বিভ্রান্ত হয় না তারা আরও হাসির পাত্র হয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা যখন কথা বলেন তখন তারা হাসির পাত্র হয়।

লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদল মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মওলা শাহিন, সদস্য সচিব খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নয়ন, মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ হাসান জ্যাকি, সদস্য সচিব আলামিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।