জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা-দাফন হাটহাজারী মাদ্রাসায়

আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২১
0

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা নামাজ হবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার জানাজা হবে বলে জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগরের প্রচার সম্পাদক আ ন ম আহমদ উল্ল্যাহ।

তিনি বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে হুজুরের প্রথম জানাজা নামাজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন তার লাশ ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে স্বজনদের দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয় হেফাজত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

হাটহাজারী মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা মাঠে হুজুরের জানাজা নামাজ হবে। মাদ্রাসার ভেতর উত্তর মসজিদসংলগ্ন কবরস্থানে হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীর পাশে তাকে দাফন করা হবে।

চট্টগ্রাম শহরের সিএসসিআর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. এমজাদ হোসাইন বলেন, দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে বাবুনগরীকে হাসপাতালে আনা হয়। আনার পরই আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তিনি কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন।

১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাবুনগরী। তার বাবার নাম আবুল হাসান ও মা ফাতেমা খাতুন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে ভর্তি হন। এখানে তিনি মক্তব, হিফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এরপর ভর্তি হন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারপর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি পাকিস্তান যান। ১৯৭৬ সালে করাচিতে জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তাখাচ্ছুছাত ফিল উলুমুল হাদিস তথা উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৭৮ সালের শেষের দিকে দেশে প্রত্যাবর্তন করে বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। বাংলাদেশের মাদ্রাসা সমূহের সর্বপ্রথম বাবুনগর মাদ্রাসায় তিনি উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগ চালু করেন। ২০০৩ সালে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। ২০২০ সালের ১৭ জুন মাদ্রাসা কমিটি সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। তার স্থলে মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শেখ আহমদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলন তীব্র হতে থাকলে ১৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে মাদ্রাসার দায়িত্ব মজলিসে শুরাকে দিয়ে দেন। ওই দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

২০১০ সালে তাকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির আমীর মৃত্যুবরণের পর ১৫ নভেম্বর সংগঠনের একটি কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে তিনি আমির হন।