ঝিনাইদহ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠাল!

আপডেট: মে ১৮, ২০২১
0

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহে জাতীয় ফল কাঁঠালের চাহিদা তেমন নেই বললেই চলে। মাদারীপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা আসায় বেশ কিছু কাঁঠাল বিক্রি হয় নগদ মূল্যে। কিন্তু এলাকার মানুষের কাছে জাতীয় ফলটির কদর খুব কম।

ভরা মৌষুমে কাঁচা বা পাকা যাই হোক-সেগুলা গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। আর কৃষকরাও নতুন করে কাঁঠাল বাগান বৃদ্ধি বা তা পরিচর্যায় মন দেন না। এ কথা কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের। জেলার সর্বাধিক কাঁঠাল উৎপাদন এলাকা বলে খ্যাত সীমান্তবর্তী মহেশপুরের জালালপুর, ভৈরবা ও খালিশপুরের কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, প্রতিটি কাঁঠালের জন্য তারা পান গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

ফলে কাঁঠালবাগান পরিচর্যা করার খরচও উঠে না। জাতীয় ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ফলটির কদর এতই কম যে, তারা কাঁচা কাঁঠাল গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বেশি ব্যবহার করেন। পাকা কাঁঠালের রোয়া বা কোয়ার চেয়ে কাঁচা কাঁঠালের ইচোড় বা পাকা কাঁঠালের বিচিই গৃহবধূদের কাছে বেশি পছন্দের তরকারি হিসেবে খাওয়ার জন্য। শৈলকুপার হাবিবপুরের এক কৃষক জানালেন, বাপ-দাদারা যে গাছ লাগিয়েছিল-তা এখনও দুয়েকটা বিদ্যমান। আম, লিচু, পেয়ারা ইত্যাদি ফলদ গাছের চারা বাণিজ্যিক বা সৌখিনভাবে লাগালেও কাঁঠালের চারা লাগাতে তেমন আগ্রহ দেখান না তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আসগর আলি মনে করছেন, কাঁঠালের বিচি দিয়ে তৈরি রুটি, বিস্কুট বা কেক ইত্যাদি বেকারিপণ্যের রপ্তানি শুরু হলে কাঠালের চাহিদা বাড়বে, বাড়বে দাম। এতে কৃষকরা আবার উৎসাহিত হবেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ জেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, শৈলকুপা ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় গতমৌসুমে ৭৩৫ হেক্টরে ৩২,৭৭০ টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়। তবে কৃষকরা বলছেন, এবার কাঁঠালের উৎপাদন মোটেও বাড়েনি। কৃষকদের মধ্যে চারা লাগানোও তেমন চোখে পড়ে না। কয়েকজন চারা উৎপাদনকারী নার্সারির মালিক ও কর্মচারীরা জানালেন, আম, লিচু, পেয়ারা ইত্যাদি ফলদ গাছের চারার পাশাপাশি তারা কাঁঠালের চারা উৎপাদন করলেও তা বেশি বিক্রি হচ্ছে না। যে কোনো কারণে কাঁঠালের গাছ কাটা হলেও নতুন চারা লাগিয়ে তা তেমন পূরণ করা হয় না বলে জানালেন তারা।