ধোলাইপাড়ের এক ডজন ভাংগাড়ি ব্যবসায়ীর সাথে চোরদের সাখ্যতা
বিপ্লব বিশ্বাস
ক্যাবল তার ও ট্রান্সফরমার চোর ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা দিয়ে ও সক্রিয় চোররা কিছুতেই থামছে না। কিছু দিন আত্মগোপনে থেকে আবারো পুরানো পেশায় জড়িয়ে পরে এই চোরদল ।
এ ব্যাপারে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সারা দেশেই একটি চক্র দেশবিরোধী চক্রান্তের অংশ হিসেবে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে, বিদ্যুতের সংযোগ না পেয়ে মানুষ কষ্ট করছে। এ ধরনের কাজ যারা করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ডিবি প্রধান আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে যে, বিদ্যুৎ বিভাগের সাব-কন্ট্রাক্টরদের যোগসাজসে এই চক্রটি চুরির কাজটি করে থাকে। ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি করছে,অন্যদিকে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে।
এদিকে, সম্প্রতি জেলার ঠাকুরগাঁও তাড়াশ,রায়গঞ্জসহ ৫ উপজেলায় ১৪ টি স্থান থেকে ৪১৯ টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে যায়। এখনো এর কোন হদিস বা চোরদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খালাবাহিনী।
অন্যদিকে, গেল মাসে এতো ট্রানসফরমার চুরি হয়েছে যার ফলে শেরপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান চোর ধরিয়ে দেয়ার জন্য এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষনা দেন।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, ধালাইপাড় এলাকায় কমপক্ষে একডজন ভাংগাড়ি ব্যবসায়ী এই চোর চক্রের সংগে রয়েছে সাখ্যতা। কেননা চোরাই পন্য এসব ব্যবসায়ীরাই দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি এরা চোরাই তার নিয়ে আটক হলেই এই ব্যবসায়ীরা ছাড়িয়ে আনে। ধোলাইপাড়ে নেহাল কর্পোরেশন নামে একটি ভাংগাড়ি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি এই চোর দলের মাধ্যমে ডেমরা আণ্ডারগ্রাউণ্ড লাইনের তামা তার কেটে নিয়ে যায়। যার মূল্য আনুমানিক ৫ কোটি টাকা।
মূলত চোরা ৫ কেভি ট্রান্সফরমার দাম ৪৫ হাজার আর ১০ কেভির দাম ৭৫ হাজার টাকা।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মকর্তারা জানান, ৫ কেভি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের দাম ৪৫ হাজার টাকা আর ১০ কেভি ট্রান্সফরমারের দাম ৭৫ হাজার। ৫ কেভির একটি ট্রান্সফরমারে ১০-১২ কেজি আর ১০ কেভির ট্রান্সফরমারে ১৪-১৬ কেজি তামার তার থাকে। প্রতিটি ট্রান্সফরমার থেকে ২০–২৫ হাজার টাকার তামার তার বিক্রি হয়। ক্যাবল তারেও একই মূল। ডেমরা থেকে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কয়েক শত টন তামা তার বিক্রি করেছে ফলে তথ্য পাওয়া গেছে।এরা ডিপিডিসি,পিডিভি,আর এ বি,ডেসকো,নেসকো,ওজোপাটি, সহ যতো বিদ্যুৎ প্রতিস্ঠানের ইন্জিনিয়ার, ঠিকাদার দের সহায়তায় সরকারি সম্পদ চুরি করে এরা কোটি কোটি মালিক বনে গেছেন।
গত একমাসে, সক্রিয় চোর দলের সদস্য সাইফুল ইসলাম, তৌহিদ ময়মনসিংহ, নাহিদ ঠাকুরগাঁও, কালু, আবুল হোসেন, শরীফ ময়মনসিংহ,সায়মন পিরোজপুর শামীম কাউখালী,মণ্টু, পোড়া জাহাঙ্গীর কাউখালী, সবুজ ভূইয়ারা, জামালপুর সদর উপজেলার গোপালপুর, দখলপুর ও মির্জাপুর গ্রাম থেকে চুরি হয়েছে ১৯টি ট্রান্সফরমার। এ ছাড়া জেলার সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ উপজেলায় চুরি হয়েছে আরও ১৩টি ট্রান্সফরমার। এই চুরির সাথে এই গ্যাং জড়িত বলে ডিবি তথ্য পেয়েছে। সেই সূত্র ধলে র্যাব ও পুলিশ অভিযানে নেমেছে।