ডুমুরিয়ায় ব্যক্তি মালিকানা জমিতে দলীয় অফিসের নামে রাতের আঁধারে টিনসেড ঘর ॥ ইউএনও এবং ওসির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ

আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২১
0

খুলনা ব্যুরো ঃ

ডুমুরিয়া উপজেলার কোমরাইল গ্রামে পৈত্রিক দখলীয় জমিতে রাতের আঁধারে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের নামে টিনসেড ঘর নির্মাণ করায় দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঐ স্থানে জমির মালিকগণ পাকাঘর নির্মাণ করায় প্রতিপক্ষরা মাইকিং করে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা পন্ড হয়ে যায়। এদিকে জমির মালিকগণের পক্ষে হারুন আল কবির উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করলে বুধবার তিনি এবং ডুমুরিয়া থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে পদক্ষেপ নেন।

লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়; ডুমুরিয়া উপজেলার কোমরাইল গ্রামে হারুন আল কবিরের দখলীয় ও পৈত্রিক জমির উপর স্থানীয় মশিউর রহমান, দেলোয়ার হোসেন জোয়ার্দার, মাহফুজুর রহমানসহ কতিপয় বক্তি ৬ মার্চ রাতের আঁধারে একটি টিনসেড ঘর তৈরি করেন। পরবর্তীতে ঐ ঘরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যালয় হিসেবে ঘোষনা দেন। এ ঘটনায় জমির মালিক হারুন আল কবির গত ২১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে জমির মালিকপক্ষ ঐ স্থানে পাকাঘর নির্মাণ করা শুরু করেন। এতে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে নির্মাণাধীন পাকা ঘর ভাঙ্গার সময় মাহাফুজুর রহমান গাজী নামে এক ব্যক্তি মারপিটের শিকার হন। জমি জবর দখলের মুলহোতা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাইকিং করে এক প্রতিবাদ সভার ঘোষনা দেন। কিন্তু প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা প- হয়ে যায়।

রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা জি এম শফিউল আলম (৫৬), সবের আলী জোয়ার্দার (৭৫) সহ উপস্থিত নাসির উদ্দিন (৫২), শাহজাহান সরদার (৬০), আশরাফ মোড়ল (৬২) বলেন; যে জায়গায় রাতের আঁধারে আওয়ামীলীগ অফিসের নামে টিনসেড ঘর তৈরি করা হয়েছে সেটা হারুন সরদারদের জমি। তাদের এ হীন কাজে কেউ সমর্থন করছেনা।

কোমরাইল গ্রামের আবু সাঈদ সরদার (৫৫) বলেন; ১৯৮৫ সাল থেকে আমি আওয়ামীলীগ করি। আওয়ামীলীগের নামে কিছু স্বার্থান্বেষী উচ্ছৃঙ্খল যুবক অপকর্ম করে দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করছে। এটা কোন দলের অফিস নয়। নেশাখোরদের লালনের জন্য রাতের আঁধারে এখানে অন্যের জমি দখল করে ঘর তৈরি করা হয়েছে। জবর দখলের নামে নোংরা স্থানে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে তাদের অপমান করা হয়েছে।

রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মেসবাহুল আলম টুটুল বলেন; বিষয়টি নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। ঐ এলাকায় একটি দলীয় কার্যালয় প্রয়োজন আছে কিন্তু তা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করা উচিত। কারো ব্যক্তিগত দখলীয় জমিতে এটা করা উচিত নয়।

ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন জোয়ার্দার বলেন; রাস্তা সংলগ্ন খাস জমি আছে সেখানে দলীয় অফিসের ঘর করা হয়েছে। তবে পেছনে কতটুকু খাস আছে তা আমার জানা নেই।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল ওয়াদুদ বলেন; আজকের (বুধবার) প্রতিবাদ সভা বন্ধ করে দিয়েছি। আজ (বুধবার) আমি ও ওসি সাহেবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপপূর্বক সীমানা নির্ধারণ করে দেখা গেছে যে, এটা আবেদনকারীর পৈত্রিক ও দখলীয়। পরে উভয়পক্ষকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

–মোঃ আনোয়ার হোসেন আকুঞ্জী