ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় কর্তৃক চিকিৎসাধীন নারীকে যৌন হেনস্থার প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবী মহিলা পরিষদের

আপডেট: জুলাই ৬, ২০২৩
0

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীর ড্রেসিং করতে গিয়ে ওয়ার্ডবয় কর্তৃক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বিবৃতি।

অদ্য ৬ জুলাই ২০২৩ তারিখ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যায় যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীর ড্রেসিং করতে গিয়ে ওয়ার্ডবয় কর্তৃক যৌন নিপীড়ন এবং তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী স্বামী-সন্তানের সঙ্গে রাজধানীর কড়াইল এলাকার ভাড়া বাসায় থাকেন। ২০১৯ সালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সেলাইয়ের স্থানে সংক্রমণ দেখা দিলে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই সময় কর্তব্যরত নার্সরা ওয়ার্ডবয় রিয়াজ উদ্দিন রবিনকে ড্রেসিংয়ের দায়িত্ব দেন।

এ সময় রবিন হাসপাতালের পাশের এলাকার একটি বাসায় ঘর ভাড়া নেয় এবং সেখানে ড্রেসিং করায়। ড্রেসিংয়ের সময় নারীর গোপনাঙ্গের কিছু ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রবিন ওই নারীর সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তাদের অন্তরঙ্গের ছবি রবিন তার মুঠোফোনে ধারণ করে নারীর স্বামীকে পাঠায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় ঐ নারী বিভিন্ন ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

আমরা লক্ষ্য করছি যে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী ও কন্যারা যৌন হয়রানি ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মত হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় কর্তৃক নারীর যৌন নিপীড়নের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। এ ধরণের ঘটনা নারী ও কন্যাদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে এবং দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নির্যাতনের শিকার নারীর যৌন হয়রানি ও যৌন নিপিীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ঘটনার সাথে জড়িতকে দ্রুত গ্রেফতার, মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনার আলোকে উত্ত্যক্তকরণ, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বন্ধে একটি পৃথক আইন তৈরি করে তা কার্যকরী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলার আহবান জানাচ্ছে।