তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের আহ্বান

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩
0

তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। প্রতিদিনের হিসেবে যা ৪৪১ জন। জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তামাকের প্রভাব থেকে বাঁচতে ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’র সদস্যবৃন্দ।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব কনফারেন্স কক্ষে জাতীয় সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’এর ত্রৈমাসিক সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।

পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং আয়োজিত ত্রৈমাসিক সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি।

সভায় সংসদ সদস্যরা বলেন, ফোরাম প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য নানা ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষণা, তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। তামাক নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে কাজ করতে হবে এবং ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। একই সাথে দেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাক চাষের বিষয়ে কঠোর হতে হবে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমেই আমরা বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ব্যাপারে এগিয়ে যেতে পারবো।

সভাপতির বক্তব্যে হাবিবে মিল্লাত বলেন, ফোরাম গঠনের পর থেকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরণের নীতিনির্ধারনী ইস্যুতে ভূমিকা রেখে চলছে এবং জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা শিশুদের জন্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে পেরেছি। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষণা, তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। ফোরামের এসমস্ত কার্যক্রম জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়াও আমরা মা ও শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়ন, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক স্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কার্যক্রম পরিচালনা করে জাতিকে সুস্থ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ফোরামে থাকা বর্তমান সদস্যরা আগামীতেও ফোরামের সম্মানিত সদস্য হিসেবে থাকবেন।

বিভিন্ন গবেষণায় এসেছে, বাংলাদেশের প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় (গ্যাটস)। তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

সভায় অন্যান্য সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডঃ মোঃ আব্দুস শহীদ, আ,স,ম ফিরোজ, নার্গিস রহমান, ফেরদৌসি ইসলাম, শিরিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরীন, আরমা দত্ত, অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, শবনম জাহান, আফতাব উদ্দিন সরকার, রওশন আরা মান্নান, রত্না আহমেদ, বাসন্তী চাকমা, লুৎফুন নেসা খান, আহসানুল ইসলাম টিটু, শামীমা আক্তার খানম, আহমেদ ফিরোজ কবির, হোসনে আরা, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, হাবিবা রহমান খান, অ্যাড. আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান, এবং অ্যাড. সৈয়দা রুবিনা আক্তার। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’র সমন্বয়ক ড. রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ এবং ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ’ এর কর্মকর্তাবৃন্দ। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ এর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে থাকে।