তিস্তার অব্যাহত ভাঙন ঠেকাতে যুবকদের প্রচেষ্টা ও স্বেচ্ছাশ্রমে বান্ডাল নির্মাণ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
0

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তার অব্যাহত ভাঙন ঠেকাতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও গাছ দিয়ে প্রতিরোধ মুলক বান্ডাল নির্মাণ করেছেন উপজেলার গতিয়াসাম মৌজার এক দল উদ্যোমী যুবক। গত দশ দিন ধরে এলাকাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া চাঁদার অর্থ দিয়ে ওই এলাকার বগুড়া পাড়া গ্রামের তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকায় কয়েক দিনের প্রচেষ্টায় পাঁচটি বান্ডাল নির্মাণ করেছেন তারা।
জানা গেছে, তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম মৌজার অন্যান্য এলাকা সহ ওই এলাকার বগুড়া পাড়া গ্রামের শত শত পরিবারের বসতভিটা সহ বাড়ী ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কাচাপাকা বসত বাড়ী তিস্তার আগ্রাসী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পাঁচটি মসজিদ সহ ওই এলাকার বগুড়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের হুমকীর ৫০ মিটার দূরে রয়েছে চর গতিয়াসাম কমিউনিটি ক্লিনিক ও ১৫০ মিটার দূরে রয়েছে গতিয়াসাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষজন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বার বার অবগত করেও ভাঙন প্রতিরোধে তেমন কোন উদ্যোগ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে একদল যুবকের উদ্যোগ ও স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসীর দেয়া চাঁদার অর্থ দিয়ে ওই এলাকার ভাঙন ঠেকাতে কয়েকদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে বাঁশ ও গাছ দিয়ে পাঁচটি বান্ডাল নির্মান করেছেন।
ভুক্তভোগী যুবক মন্তাজ উদ্দিন জানান, গত তিন মাসে প্রায় তিন হাজার কাচাপাকা বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। শত শত একর আবাদি জমি তিস্তা নদীর পেটে চলে গেছে। তিনি আরো বলেন, এমন দূর্দিনেও আমরা কারও কোন প্রকার সহযোগীতা পাইনি। তাই আমরা যুকরা বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর কাছ চাঁদা সংগ্রহ করে বাঁশ ও গাছ দিয়ে বান্ডাল নির্মাণ করেছি।
অপর এক ভুক্তভোগী এমদাদুল হক জানান, আমার জীবনে এবারই প্রথম তিস্তার এমন ভাঙন দেখলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারীভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে জিও ব্যাগ চেয়েও পাইনি। বাধ্য হয়ে নিজেরাই বান্ডাল নির্মাণ করে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি হাসান মাহমুদ বলেন, গত ১৫ই জুলাই তিন কিলোমিটার জুড়ে তিস্তার পূর্ব তীর সংরক্ষনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করি। কিন্তু এখনো আবেদন পাশ হয়নি। আবেদন পাশ হলেই কাজ শুরু করা হবে।
রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন, আমি গত বুধবার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে এসেছি। ইতিমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। আমি তাকে অনুরোধ করেছি তিস্তার ভাঙন প্রতিরোধে যেন স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নেয়ার জন‍্য।
##/