দিনাজপুরে ব্যবসায়ীকে হয়রানি অভিযোগের অন্তরালে অপরাধের ম্বর্গ রাজ্য!

আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২১
0


বিপ্লব বিশ্বাস

[২]দিনাজপুরের পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে আকুল আবেদন জানিয়েছেন ব্যবসায়ী‘ খলিলুল্লাহ আজাদ ওরফে খাইরুল আজাদ মিল্টন (৪৫)।
যুবলীগ নেতা’ পরিচয়দানকারী এ ব্যক্তির অভিযোগ স্রেফ চাঁদার দাবিতে প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে তার বিরুদ্ধে ১৩টি জিআর ও ৫টি ননজিআর মিলে ১৮টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।

[৩]গত ২১ নভেম্বর রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সকল মামলার বিভাগীয় তদন্তেরও দাবি জানান। তবে লিখিত বক্তব্যে এবং সংবাদ সম্মেলনে টাঙানো ব্যানারে অভিযোগের তির দিনাজপুর পুলিশ সুপারের (এসপি) বিরুদ্ধে থাকলেও বক্তব্যের সময় ভিন্ন সুর দিয়েছেন। অন্যদিকে তার উপস্থাপিত কাগজপত্র পর্যালোচনায় মিলেছে ভিন্ন চিত্র। চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে খলিলুল্লাহ আজাদ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। অথচ দুটি বাদে সব কটি মামলার বাদী বিভিন্ন ভুক্তভোগী। আগে থানায় কোন জিডি কিংবা অভিযোগ না থাকলেও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে কেন এতগুলো মামলা দায়ের হলো- এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই দিনাজপুরের স্থানীয় সাংবাদিক এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে খলিলুল্লাহ আজাদ ওরফে খাইরুল আজাদ মিল্টন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।

[৪]জানা গেছে, প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেই মাত্র ক’বছরে মো. খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন ‘হোয়াইট কালার ক্রিমিনাল’ বনেছেন। জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে যেমন নিজের আখের গুছিয়েছেন, তেমনি তার খপ্পরে পড়ে বহু নিরীহ মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ থাকার কারণেই মিল্টনের বিরুদ্ধে কেউ এতদিন অভিযোগ করার সাহস পায়নি। কিন্তু যখন একটি মামলা হয়, তখনই অন্য ভুক্তভোগীরা সাহসী হয়ে ওঠেন।
[৫]এছাড়া তার বিরুদ্ধে গাড়ি চুরি এবং মানি লন্ডারিংয়ের মামলাও রয়েছে। সব ক’টি মামলাকে মিথ্যে এবং সাজানো বলে দাবি করলেও অনুসন্ধানে তার সত্যতা মিলেনি।

[৬]ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে মো. খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন নিজেকে একজন ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তার ভাষ্যানুযায়ী তিনি [৭]জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ‘সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১’ এর জেলার দপ্তর সম্পাদক। এছাড়া খানসামা উপজেলায় রাইস মিল এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারী ব্যবসা করেন।

[৭]তবে স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব সাইনবোর্ড আর প্যাডসর্বস্ব। মূলতঃ তিনি ছিলেন দিনাজপুরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ‘মাসোহারা’ আদায়কারী। এ সুবাদে তদ্বিরবাজি করেও অর্থ কামিয়েছেন। পাশাপাশি শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা পুঁজি করেই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন।
[৮]সূত্রের ভাষ্যানুযায়ী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হবার সুবাদে সেই শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে দ্রুত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন খাইরুল আজাদ মিল্টন। দিন গড়াবার সাথে সাথে সেটি যেমন পোক্ত হয়, তেমনি অর্থ-বিত্তে ফুলে ফেঁপে ওঠেন মিল্টন। ওই সময়ের (সাবেক) জেলা প্রশাসনের নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রকও হয়ে ওঠেন তিনি।

এ নিয়ে নানা রসালো কাহিনীও স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে আছে। এভাবে সম্পর্ককে পুঁজি করে এভাবে আঁখের গুছিয়েছেন তিনি।
[৯]এ ব্যাপারে মিলটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি দাবী করেন। এ সব মামলা ও অভিযোগ সাজানো বলে দাবি।