দুর্গাপূজায় পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা বাধ্যতামূলক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
0

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, আসন্ন দুর্গাপূজায় দেশের প্রতিটি পূজা মণ্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেইসাথে পূজা মণ্ডপে স্থায়ীভাবে আনসার সদস্যরা পাহারায় থাকবেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা পূজামণ্ডপে সিসি টিভি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা এসব পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূজা মণ্ডপের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী; এটা পুলিশ হতে পারে, হতে পারে আনসার, যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে সেইভাবে ব্যবস্থা করা হবে।

রোববার সচিবালয়ে আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হবে। এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ৩২ হাজার ১৬৮টি। আমি অনুরোধ করেছি, এটা যেন আর না বাড়ে। যদি কমে আমাদের জন্য সুবিধা। তবে তারা (পূজা উদযাপন কমিটি) জানিয়েছেন দুই-চারটা কমতে-বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, আমরা বলে দিয়েছি, প্রত্যেকটা পূজামণ্ডপে যেন তাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকেন। স্বেচ্ছ্বাসেবক নিশ্চিত চেনার জন্য তাদের বাহুতে যাতে আর্ম ব্যান্ড থাকে। পুলিশ যাতে দেখে নিশ্চিত হতে পারে যে তারা (স্বেচ্ছাসেবক) সেখানে আছেন।

গত বছর কোভিডের জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ পুলিশ রেখেছিলাম। এবার আমরা বলছি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষ করে আনসার বাহিনী স্থায়ীভাবে থাকবে। তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পূজা উদযাপনকারীরা সমস্ত মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক রাখবেন। তাদের আর্ম ব্যান্ড থাকবে, যাতে আমরা নিশ্চিত হতে পারি কারা স্বেচ্ছাসেবক। সে জন্য আর্ম ব্যান্ড পরার জন্য আমরা অনুরোধ করেছি।

গত বছর কুমিল্লার একটি পূজা মণ্ডপে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল, তার প্রেক্ষিতে এ বছর পূজা উপলক্ষে বিশেষ কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি মনে করি কোন পূজামণ্ডপে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে, সেখানে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নেবো।

তিনি আরো বলেন, ‘বড় বড় পূজা মণ্ডপে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী টহলে থাকবে। পূজা মণ্ডপে আসা নারী ও শিশু দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নারী ও শিশুদের উত্ত্যক্তকরণ, ইভটিজিং, মাদক সেবন রোধে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রোধে পূজা উদযাপন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে। যে কোনো ইমারজেন্সিতে ৯৯৯ জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন করতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পূজা মণ্ডপকে কেন্দ্র করে; বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার নবাবপুরসহ সারাদেশে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচার ও গুজব রোধে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হবে। এই ধরনের অপচেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থার মুখোমুখি হবে।

তিনি বলেন, প্রতি মণ্ডপে পুরুষ-নারীদের জন্য পৃথক প্রবেশ ও নির্গমন পথ রাখতে হবে। পুলিশ সদর দফতর বিভাগীয় জেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নাম্বার পূজা উদযাপন কমিটি এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে থাকবে। আজান ও নামাজের সময় মসজিদের পার্শ্ববর্তী মণ্ডপগুলোতে পূজা চলাকালীন এবং বিসর্জনের সময় যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জুয়া ও মাদক সেবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পূজা মণ্ডপে অগ্নি নির্বাপকসহ যে কোন দুর্ঘটনা রোধে ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত থাকবে। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব চলাকালে ঢাকাসহ সারাদেশে বিসর্জনের সময় ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ডুবুরি থাকবে। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত পূজা মণ্ডপে কোস্টগার্ড নিরাপত্তা প্রদান করবে, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের সাথে থাকবে। দুষ্কৃতিকারীদের অশুভ তৎপরতারোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থাকবে।

সূত্র : ইউএনবি