দূষণ রোধে জনসম্পৃক্ত সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন: বুড়িগঙ্গা নদী উৎসবের সংবাদ সম্মেলনে শরীফ জামিল

আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১
0

বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে জনসম্পৃক্ত সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। বুড়িগঙ্গা নদী উৎসব আয়োজন সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে আজ ১০ নভেম্বর বুধবার তিনি এই মন্তব্য করেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আজ ১০ নভেম্বর, বুধবার এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল এর সভাপতিত্বে এবং সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার অন্যতম নেতা এবং নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা, সচেতন নাগরিক সমাজ সংগঠনের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর আদেল, যুব বাপা’র কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রাওমান স্মিতা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ কামরুজ্জামান, পরিবেশ কর্মী মামুন কবীর প্রমূখ।

ঢাকা শহরের অন্যতম প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা দূষণবিরোধী নাগরিক প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ওয়াটাকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এবং বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার যৌথ উদ্যোগে বুড়িগঙ্গা নদী দূষণ ও দখল বন্ধের মাধ্যমে নদীকে বাঁচিয়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ২৭ নভেম্বর, ২০২১, শনিবার, বুড়িগঙ্গা নদী তীরে অবস্থিত বছিলা সরকারি প্রাথমিক বিদালয় মাঠে অনুষ্ঠিতব্য “বুড়িগঙ্গা নদী উৎসব ২০২১” কে সফল করার লক্ষ্যে আজ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বুড়িগঙ্গা নদী উৎসবকে ঘিরে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শরীফ জামিল জানান, ইউএসএআইডি, এফসিডিও এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় দূষণবিরোধী শক্তিশালী নাগরিক প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚গোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমÐলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) কে সাথে নিয়ে গঠিত ওয়াটারকির্পার্স কনসোর্টিয়াম এবং বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চা’র যৌথ উদ্যোগে এই বুড়িগঙ্গা নদী উৎসব ২০২১ এর আয়োজন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে আগামী ২৭ নভেম্বর, ২০২১ তারিখে বছিলাতে যে বুড়িগঙ্গা নদী উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে তার মধ্যে যেসকল কর্মসূচি থাকছে তা হলো:

১. উৎসবের প্রচারের অংশ হিসাবে ১১ নভেম্বর দুপুর ২:০০ টায় কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া ঘাট এবং বিকেল ৩:০০ টায় বছিলাতে স্টিকার ক্যাম্পেইন করা হবে। এই প্রচারকার্য উৎসবের আগের দিন পর্যন্ত চলমান থাকবে।
২. উৎসবের প্রচারের অংশ হিসাবে ২৬ নভেম্বর সকাল ৮:০০ টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে একটি সাইকেল র‌্যালি শুরু হয়ে বছিলা ব্রিজের নিচে বছিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
৩. উৎসবের প্রচারের অংশ হিসাবে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০:০০ টায় বছিলাতে একটি ডিঙ্গি নৌকার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
৪. ২৬ নভেম্বর সাইকেল র‌্যালি এবং নোকা প্রতিযোগিতার পর মূকাভিনয় প্রদর্শনী শেষে সকাল ১১:০০ টায় পরবর্তী দিনের কর্মসূচি অর্থাৎ বুড়িগঙ্গা নদী উৎসবের পূর্ণাঙ্গ অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করা হবে।
৫. ২৭ নভেম্বর সকাল ১০:০০ টায় শুভ উদ্বোধনের পর দিনব্যাপী উৎসবে থাকবে বুড়িগঙ্গা নদী, এর দখল, দূষণ ও প্রতিকার বিষয়ে আলোচনা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, মূকাভিনয় প্রভৃতি।
৬. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য নদী উৎসবে ঢাকা উত্তর সিটি করর্পোরেশনের মেয়র জনাব আতিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও ঢাকা ১২ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ এর সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবীর অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উৎসবে বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শরীফ জামিল বলেন, ট্যানারি শিল্পকে বন্ধ না করে জাতীয় অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে সুপরিকল্পিত ইটিপি’র ব্যবস্থা করতে হবে। মাথা ব্যথায় মাথা কেটে ফেলা যাবে না। ট্যানারি শিল্প আমাদের দেশের সম্পদ। নদী দূষণ বন্ধে যথাযথ ইটিপি স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নদীর প্রশ্নে আপোষহীন এবং যতœবান। তাই নদীকে বাঁচাতে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসা। নদী পাড়ের স্থানীয় জনগোষ্ঠী, কমিউনিটি নেতৃত্ব এবং সরকারকে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাঁচিয়ে তুলতে হবে আমাদের বুড়িগঙ্গাকে। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।