দেড়যুগ বিদেশে থাকার পর শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুলের সহযোগী, দেড়ডজন মামলার আসামী নাসির এখন ঢাকা

আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২৩
0


নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই যুগ ইতালিতে পলাতক থাকার পর দেশে ফিরেছেন প্রায় দেড় ডজন মামলার আসামী মো.নাসির ওরফে বড় মিয়া। এতো দিন তিনি ইতালি বসেই সাত থানা এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো। তিনি দেশে ফেরায় অত্র এলাকার ঠিকাদার, ব্যবসায়ীরা রয়েছেন আতঙ্কে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তারী পারোয়ানা নিয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে ম্যানেজ করে দুই যুগ ইতালিতে পলাতক থাকার পর তিনি গত সপ্তাহে দেশে ফেরেন।

সৃত্র জানায়, আওয়ামী
সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতার ছত্রছায়ায় তিনি বর্তমানে ওয়ারিতেই রয়েছেন ! ঢাকায় এসেই নাসির ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর ৮ নং ওর্য়াড কউলর সুলতান মিয়ার সংগে বৈঠক ও করেন।
এ ব্যাপারে গতকাল তার গ্রামীন ফোন নাম্বারে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রগুলো বলেছে, মো. নাসির একসময় ঢাকায় মাদক বেচাকেনার স্থান কমলাপুর টি টি পাড়াসহ চারটি বড় স্থান তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখানকার মাদক কারবারে প্রায় একক নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। মাদক সম্রাট হিসেবে নাম প্রকাশ পাওয়ার পর ২০০০ সালে ইতালি পাড়ি জমান দেড় ডজন মামলার আসামি নাসির। বিদেশে বসেও গোপীবাগ, বাসাবো, সবুজবাগ, শাজাহানপুর, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, টিকাটুলী, ওয়ারী ও কমলাপুর এলাকার অপরাধ সাম্রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ করেন।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, নাসির এবং আরেক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল গ্রুপের প্রধান ঈদুলের হয়ে পুরান ঢাকায় চাঁদাবাজি করছেন ফুয়াদ ফয়সাল জন। নাসিরসহ তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
একসময় তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।এই নাসির। পরে মাদক কারবারসহ নানা অপকর্মে জড়ানোয় তার নাম বেশি আলোচিত হওয়ায় দেশ ছাড়েন নাসির।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে, গত দেড় যুগ ধরে ইতালিতে বসে নাসির, আর দেশে কারাগারে বসে ঈদুল এখনও অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছেন। ঈদুল রয়েছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে। নাসির ও ঈদুল নানা কৌশলে তাদের কিছু সহযোগীকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে ঢুকিয়ে দেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক এক সাংগঠনিক সম্পাদকের হাত ধরে ফুয়াদ ফয়সাল জন যুবলীগ নেতা বনে যান। তিনি বিএনপির অনুসারী হলেও তিনি বর্তমানে যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিতি ।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রশাসনের অসাধু লোকজনকে হাত করে আন্ডারওয়ার্ল্ডে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখছেন নাসির। বিদেশ থেকে প্রায়ই প্রশাসনের লোকজনের জন্য উপহার পাঠান তিনি। কিছুদিন আগেও ডিসি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার জন্য অনেক দামি ফোন পাঠিয়েছেন। তার প্রভাবাধীন এলাকায় কোনো নতুন কর্মকর্তা যোগদান করলেই তাকে উপহার বা উপঢৌকন দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান তিনি।

]পুরান ঢাকার একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাসিরের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী সুপারমার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালায়। ফোন করে অনেককে ভয়ভীতিও দেখান নাসির। বতর্মানে নাসির দেশে ফেরায় তারা আতঙ্কিত।
গোয়েন্দারা বলছেন, নাসিরের শিষ্য হয়ে কাজ করছেন আসিফ জ্যাম, সবুর, মো. ইকবাল, মো. সালাম, কসাই লিটন, কিলার মাইকেল। যাত্রাবাড়ী ও ইত্তেফাক মোড়ে প্রতি রাতে এই গ্রুপের লোকজন পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করছে। বিগত দিনে ইতালি থেকে মাঝে মাঝে ভারত পর্যন্ত এসে শিষ্যদের সঙ্গে শলাপরামর্শ ও ঘোরাঘুরি করে আবার ফেরত গেলেও এখোন দেশে বসেই সব নিয়ন্ত্রণ করছে এই নাসির।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, নাসির দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক। তার নামে কি ধরণের মামলা আছে। তা আমরা খোজ খবর নিচ্ছি।